ঢাকা ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কপালে দুঃখ বাড়লো নাফিজ সারাফাতের

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
  • সময় ১০:২৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 27

চৌধুরী নাফিজ সারাফাত

নাফিজ সারাফাতকে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ তেমনভাবে না চিললেও, যারা চেনার তার ঠিকই চেনেন। বাংলাদেশের অন্যতম ক্যারেক্টার, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগীদের তালিকা করলে তিনি থাকবেন, এমনটাই মনে করেন পোড় খাওয়া অনেক রাজনীতিবিদ থেকে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল অনেক নেতা। আলোচিত সমালোচিত ব্যবসায়ী চৌধুরী নাফিজ সারাফাতের কপালে দুঃখ বেড়েছে এবার।

পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ ও ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফতের নামে থাকা ২২টি ফ্ল্যাট, দুটি বাড়ি, প্লট ও জমিসহ সব সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক (প্রসিকিউশন) আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ক্রোকের আদেশ দেওয়া সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের নামে রাজধানীর গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০টি ফ্ল্যাট, গুলশান-২ ২০ তলাবিশিষ্ট একটি বাড়ি, পূর্বাচলে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট এবং গাজীপুর ও বাড্ডায় ২৫ কাঠার জমি।

আর আঞ্জুমান আরা শহীদের নামে রাজধানীতে পাঁচটি ফ্ল্যাট, একটি এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর চারতলা একটি বাড়ি ও ১৩ কাঠা জমি এবং চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফতের নামে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সাতটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এদিন দুদকের অনুসন্ধান টিমের প্রধান কমিশনের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান এসব স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, নাফিজ সরাফাত ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও নিজেদের মাধ্যমে একে অপরের যোগসাজশে প্রায় ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগের ওপর অনুসন্ধান চলমান। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিষয়ে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ এবং তার পুত্র চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফতের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে এবং তারা পলাতক রয়েছেন।

প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পত্তিসমূহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সম্পৃক্ত অপরাধ তথা দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত বা বৈধ আয় বহির্ভূতভাবে অর্জন করা হয়েছে মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের সঙ্গে তার ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদ অর্জনের বিষয়টি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও (৩) ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা স্থাবর সম্পত্তিসমূহ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর, বন্ধক বা বেহাত করার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা করছেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। বর্তমানে সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এসব স্থাবর সম্পত্তিসমূহ অবিলম্বে ক্রোককরণ আবশ্যক।

দুদকের পক্ষে মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের এসব সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন।

শেয়ার করুন

কপালে দুঃখ বাড়লো নাফিজ সারাফাতের

সময় ১০:২৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

নাফিজ সারাফাতকে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ তেমনভাবে না চিললেও, যারা চেনার তার ঠিকই চেনেন। বাংলাদেশের অন্যতম ক্যারেক্টার, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগীদের তালিকা করলে তিনি থাকবেন, এমনটাই মনে করেন পোড় খাওয়া অনেক রাজনীতিবিদ থেকে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল অনেক নেতা। আলোচিত সমালোচিত ব্যবসায়ী চৌধুরী নাফিজ সারাফাতের কপালে দুঃখ বেড়েছে এবার।

পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ ও ছেলে চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফতের নামে থাকা ২২টি ফ্ল্যাট, দুটি বাড়ি, প্লট ও জমিসহ সব সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক (প্রসিকিউশন) আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ক্রোকের আদেশ দেওয়া সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে চৌধুরী নাফিজ সরাফাতের নামে রাজধানীর গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০টি ফ্ল্যাট, গুলশান-২ ২০ তলাবিশিষ্ট একটি বাড়ি, পূর্বাচলে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট এবং গাজীপুর ও বাড্ডায় ২৫ কাঠার জমি।

আর আঞ্জুমান আরা শহীদের নামে রাজধানীতে পাঁচটি ফ্ল্যাট, একটি এলাকায় সাড়ে সাত কাঠা জমির ওপর চারতলা একটি বাড়ি ও ১৩ কাঠা জমি এবং চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফতের নামে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সাতটি ফ্ল্যাট ক্রোক করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এদিন দুদকের অনুসন্ধান টিমের প্রধান কমিশনের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান এসব স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, নাফিজ সরাফাত ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে গ্রাহকের সঙ্গে প্রতারণা ও নিজেদের মাধ্যমে একে অপরের যোগসাজশে প্রায় ৮৮৭ কোটি টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগের ওপর অনুসন্ধান চলমান। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিষয়ে সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা শহীদ এবং তার পুত্র চৌধুরী রাহিব সাফওয়ান সারাফতের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাবর সম্পত্তির তথ্য পাওয়া গেছে এবং তারা পলাতক রয়েছেন।

প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পত্তিসমূহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সম্পৃক্ত অপরাধ তথা দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত বা বৈধ আয় বহির্ভূতভাবে অর্জন করা হয়েছে মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের সঙ্গে তার ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদ অর্জনের বিষয়টি মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২) ও (৩) ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান শুরুর পর থেকে অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা স্থাবর সম্পত্তিসমূহ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর, বন্ধক বা বেহাত করার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা করছেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। বর্তমানে সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এসব স্থাবর সম্পত্তিসমূহ অবিলম্বে ক্রোককরণ আবশ্যক।

দুদকের পক্ষে মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তাদের এসব সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন।