‘এনসিপি কোনো এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দল নয়’ | Bangla Affairs
০৯:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৬ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘এনসিপি কোনো এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দল নয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
  • সময় ০৫:১১:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
  • / 19

এনসিপি সদস্যসচিব আখতার হোসেন

জাতীয় নাগরিক পার্টি কোনো এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দল নয়। গণঅভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতৃত্ব এই দলের হাল ধরেছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

তিনি বলেন, আমরা সারাদেশের মানুষের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধির কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। যদি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচিতে কেউ অংশগ্রহণ করে থাকেন সেটাকে আমরা দলগতভাবে অবশ্যই যাচাইবাছাইয়ের মধ্য দিয়ে যাব।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রংপুর নগরীর মাহীগঞ্জে জনসংযোগ কর্মসূচির আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, আমাদের দলের বিভিন্ন সদস্যের মধ্যে তাদের মধ্যকার কথাবার্তা নিয়ে অনেকের মনে হয়েছে যে দলের মধ্যে সমন্বয়হীনতা তৈরি হয়েছে। কিন্ত বিষয়টি এরকম নয়। আমরা যারা দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে কেন্দ্রীয় সদস্য ও সারা দেশের নেতৃবৃন্দের যোগাযোগ রয়েছে। আমরা সকলে মিলে নতুন যে বাংলাদেশের বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখি, যে রাজনীতির শপথ নিয়েছি সে পথেই কাজ করে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগকে গণহত্যার প্রত্যক্ষ মদদদাতা ও জাতীয় পার্টিকে তার দোসর উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির জোগসাজশে দেশে পরপর তিনটি ডামি ও প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানুষের মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে যে ফ্যাসিবাদের জাঁতাকলে পিষ্ট ছিল তার পিছনে সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি। ২০২৪ সালে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে এর প্রকাশ্য মদদদাতা সংগঠন আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসর হচ্ছে জাতীয় পার্টি।

তিনি আরও বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড, মোদি বিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড ও জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ব্যক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সরাসরি জড়িত। যারা গণহত্যার আঞ্জাম দেয় এবং বাংলাদেশের মানুষের উপর মানবতাবিরোধী অপরাধ চাপিয়ে দেয় এ শক্তি কোনোভাবেই গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়। কোনো দেশ কোনোভাবেই ফ্যাসিবাদী কোনো শক্তিকে সে দেশের রাজনীতি করতে দেওয়ার অধিকার দেয় না। এজন্য কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনের উপাদান হতে পারে না। ফ্যাসিবাদী শক্তি যাতে নির্বাচনে না আসতে পারে তার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের বিজয় সূচিত হয়।

আখতার হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে ঘোষণা দিয়েছেন, সরকারের মধ্যে যদি সদিচ্ছা থাকে তাহলে এই সময়ের মধ্যে সংস্কারের প্রাথমিক এবং বিচারের দৃশ্যমান কর্মসূচি হাতে নেওয়া সম্ভব। রাজনৈতিক শক্তিগুলো যদি সরকারকে সহযোগিতা করে তাহলে সংস্কার এবং বিচারের দৃশ্যমান করে নির্বাচনের পথে অগ্রসর হওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে সময়সীমার কথা বলেছেন তার মধ্যে নির্বাচন হওয়ার মতো বাস্তব পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি গণপরিষদ নির্বাচন হওয়ার বাস্তবতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা রয়েছে। বাংলাদেশের যে সংবিধান রয়েছে এই ফ্যাসিবাদী, এই এক নায়কতান্ত্রিক, অগণতান্ত্রিক ও জনগণের অধিকার বঞ্চিত সংবিধানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শাসন কাঠামো পরিচালিত হোক এটা আর দেশের মানুষ চান না। দেশের মানুষ নতুন এক সংগঠনের প্রত্যাশা করে। দেশে ক্রিয়াশীল ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল রাজনীতি পক্ষে গণপরিষদ নির্বাচনের ব্যাপারে মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা সেই আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) সদস্যসচিব নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবারের মত রংপুরে আসেন আখতার হোসেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর সাতমাথা থেকে জনসংযোগ শুরু করেন তিনি। পরে ভ্যানযোগে পীরগাছা ও কাউনিয়ার কয়েকটি জায়গায় জনসংযোগ শেষে টেপামধুপুর বাজারের কারবালা মাঠে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করবেন তিনি।

শেয়ার করুন

‘এনসিপি কোনো এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দল নয়’

সময় ০৫:১১:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

জাতীয় নাগরিক পার্টি কোনো এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন দল নয়। গণঅভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতৃত্ব এই দলের হাল ধরেছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

তিনি বলেন, আমরা সারাদেশের মানুষের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধির কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। যদি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচিতে কেউ অংশগ্রহণ করে থাকেন সেটাকে আমরা দলগতভাবে অবশ্যই যাচাইবাছাইয়ের মধ্য দিয়ে যাব।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রংপুর নগরীর মাহীগঞ্জে জনসংযোগ কর্মসূচির আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আখতার হোসেন বলেন, আমাদের দলের বিভিন্ন সদস্যের মধ্যে তাদের মধ্যকার কথাবার্তা নিয়ে অনেকের মনে হয়েছে যে দলের মধ্যে সমন্বয়হীনতা তৈরি হয়েছে। কিন্ত বিষয়টি এরকম নয়। আমরা যারা দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে কেন্দ্রীয় সদস্য ও সারা দেশের নেতৃবৃন্দের যোগাযোগ রয়েছে। আমরা সকলে মিলে নতুন যে বাংলাদেশের বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখি, যে রাজনীতির শপথ নিয়েছি সে পথেই কাজ করে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগকে গণহত্যার প্রত্যক্ষ মদদদাতা ও জাতীয় পার্টিকে তার দোসর উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির জোগসাজশে দেশে পরপর তিনটি ডামি ও প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানুষের মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে যে ফ্যাসিবাদের জাঁতাকলে পিষ্ট ছিল তার পিছনে সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি। ২০২৪ সালে যে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে এর প্রকাশ্য মদদদাতা সংগঠন আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসর হচ্ছে জাতীয় পার্টি।

তিনি আরও বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে হত্যাকাণ্ড, মোদি বিরোধী আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড ও জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ব্যক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সরাসরি জড়িত। যারা গণহত্যার আঞ্জাম দেয় এবং বাংলাদেশের মানুষের উপর মানবতাবিরোধী অপরাধ চাপিয়ে দেয় এ শক্তি কোনোভাবেই গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়। কোনো দেশ কোনোভাবেই ফ্যাসিবাদী কোনো শক্তিকে সে দেশের রাজনীতি করতে দেওয়ার অধিকার দেয় না। এজন্য কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচনের উপাদান হতে পারে না। ফ্যাসিবাদী শক্তি যাতে নির্বাচনে না আসতে পারে তার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের বিজয় সূচিত হয়।

আখতার হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে ঘোষণা দিয়েছেন, সরকারের মধ্যে যদি সদিচ্ছা থাকে তাহলে এই সময়ের মধ্যে সংস্কারের প্রাথমিক এবং বিচারের দৃশ্যমান কর্মসূচি হাতে নেওয়া সম্ভব। রাজনৈতিক শক্তিগুলো যদি সরকারকে সহযোগিতা করে তাহলে সংস্কার এবং বিচারের দৃশ্যমান করে নির্বাচনের পথে অগ্রসর হওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে সময়সীমার কথা বলেছেন তার মধ্যে নির্বাচন হওয়ার মতো বাস্তব পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি গণপরিষদ নির্বাচন হওয়ার বাস্তবতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা রয়েছে। বাংলাদেশের যে সংবিধান রয়েছে এই ফ্যাসিবাদী, এই এক নায়কতান্ত্রিক, অগণতান্ত্রিক ও জনগণের অধিকার বঞ্চিত সংবিধানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শাসন কাঠামো পরিচালিত হোক এটা আর দেশের মানুষ চান না। দেশের মানুষ নতুন এক সংগঠনের প্রত্যাশা করে। দেশে ক্রিয়াশীল ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল রাজনীতি পক্ষে গণপরিষদ নির্বাচনের ব্যাপারে মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা সেই আকাঙ্ক্ষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) সদস্যসচিব নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমবারের মত রংপুরে আসেন আখতার হোসেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর সাতমাথা থেকে জনসংযোগ শুরু করেন তিনি। পরে ভ্যানযোগে পীরগাছা ও কাউনিয়ার কয়েকটি জায়গায় জনসংযোগ শেষে টেপামধুপুর বাজারের কারবালা মাঠে ইফতার ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করবেন তিনি।