ঢাকা ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এক্স ব্যবহারকারীদের তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা

আকাশ ইসলাম
  • সময় ০৩:১২:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
  • / 223

ডিজিটাল যুগে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি অংশে প্রবেশ করেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। কিন্তু এই এআই-এর প্রশিক্ষণ কোথা থেকে আসছে? আমাদের পোস্ট, আমাদের ডাটা কি ব্যবহার হচ্ছে? সম্প্রতি ইলন মাস্কের মালিকানাধীন ‘এক্স’ নিয়ে আসছে এমনই এক সিদ্ধান্ত, যা গোপনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

সম্প্রতি এক্স, পূর্বে যা টুইটার নামে পরিচিত ছিল, ঘোষণা দিয়েছে যে তারা শুধু নিজেদের এআই চ্যাটবট ‘গ্রক’ এর প্রশিক্ষণে ব্যবহারকারীদের পোস্ট ব্যবহার করবে না, বরং অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানের এআই মডেলকেও এই পোস্টগুলো প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের সুযোগ দেবে। এটি অনেকের মনে প্রশ্ন তুলেছে, আমাদের পোস্টগুলো এআই-এর হাতিয়ার হয়ে উঠছে কিনা?

আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া এক্সের নতুন গোপনীয়তা নীতিমালা অনুযায়ী, যেকোনো প্রতিষ্ঠান তাদের এআই মডেল প্রশিক্ষণে এক্সের পোস্ট ব্যবহার করতে পারবে। এটি কেবল গ্রক নয়, যে কোনো সংস্থার জন্যও প্রযোজ্য হবে। এই পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে ব্যবহারকারীদের মধ্যে।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তিগত পোস্ট ও ডাটা এভাবে ব্যবহার করা হলে তা অনেকগুলো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। প্রাথমিকভাবে, আমরা জানি না কী ধরনের ডাটা বা পোস্ট ব্যবহার করা হচ্ছে এবং তা কোথায় যাচ্ছে। গোপনীয়তার প্রশ্ন তো রয়েছেই, সাথে এটি অপব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করে।

গোপনীয়তার বিষয়টি ছাড়াও আরও একটি উদ্বেগের বিষয় হলো, এই পোস্টগুলো কীভাবে এবং কোথায় ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যবহারকারীরা কি তাদের ডাটার উপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন? বিশেষ করে এমন পরিস্থিতিতে যখন এই পোস্টগুলো ব্যক্তিগত মতামত, আবেগ বা ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে লেখা হয়।

তবে, ব্যবহারকারীরা চাইলে তাঁদের পোস্টের তথ্য ব্যবহার করার অনুমতি বাতিল করতে পারবেন। সেটিংস অপশনের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সবাই কি সচেতনভাবে এ সিদ্ধান্ত নেবে? এবং এটি কি যথেষ্ট সুরক্ষা দিতে পারবে?

এ ধরনের গোপনীয়তা নীতিমালা খুবই সংবেদনশীল। অনেক সময় সাধারণ ব্যবহারকারীরা জানেন না কিভাবে এসব নীতি কাজ করে, অথবা সেটিংস পরিবর্তন করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তারা তা এড়িয়ে যান। ফলে, তাদের ডাটা অনিচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহৃত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।

এক্সের এই সিদ্ধান্ত এআই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ প্রশিক্ষণে ডাটার নতুন এক উৎসকে উন্মোচন করেছে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়, এআই প্রযুক্তির উন্নতি কি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিনিময়ে হবে? যখন বড় বড় কোম্পানিগুলো আমাদের পোস্টগুলো তাদের প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার করে, তখন সেই ডাটা কি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে?

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে আমাদের তথ্য, আমাদের পোস্ট, এমনকি আমাদের দৈনন্দিন চিন্তাভাবনাও হয়ে উঠতে পারে ডাটা। এক্সের নতুন গোপনীয়তা নীতিমালা এটি স্পষ্ট করেছে যে, আমরা এখন এমন একটি সময়ের দিকে যাচ্ছি যেখানে আমাদের তথ্যের মূল্য আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

কিন্তু এই ডাটার ব্যবহার কি আমাদের উপকারে আসবে, না ক্ষতি করবে? গোপনীয়তা কি নিরাপদ থাকবে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর সময়ই দেবে।

শেয়ার করুন

এক্স ব্যবহারকারীদের তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা

সময় ০৩:১২:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪

ডিজিটাল যুগে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি অংশে প্রবেশ করেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। কিন্তু এই এআই-এর প্রশিক্ষণ কোথা থেকে আসছে? আমাদের পোস্ট, আমাদের ডাটা কি ব্যবহার হচ্ছে? সম্প্রতি ইলন মাস্কের মালিকানাধীন ‘এক্স’ নিয়ে আসছে এমনই এক সিদ্ধান্ত, যা গোপনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

সম্প্রতি এক্স, পূর্বে যা টুইটার নামে পরিচিত ছিল, ঘোষণা দিয়েছে যে তারা শুধু নিজেদের এআই চ্যাটবট ‘গ্রক’ এর প্রশিক্ষণে ব্যবহারকারীদের পোস্ট ব্যবহার করবে না, বরং অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠানের এআই মডেলকেও এই পোস্টগুলো প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহারের সুযোগ দেবে। এটি অনেকের মনে প্রশ্ন তুলেছে, আমাদের পোস্টগুলো এআই-এর হাতিয়ার হয়ে উঠছে কিনা?

আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া এক্সের নতুন গোপনীয়তা নীতিমালা অনুযায়ী, যেকোনো প্রতিষ্ঠান তাদের এআই মডেল প্রশিক্ষণে এক্সের পোস্ট ব্যবহার করতে পারবে। এটি কেবল গ্রক নয়, যে কোনো সংস্থার জন্যও প্রযোজ্য হবে। এই পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে ব্যবহারকারীদের মধ্যে।

সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তিগত পোস্ট ও ডাটা এভাবে ব্যবহার করা হলে তা অনেকগুলো সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। প্রাথমিকভাবে, আমরা জানি না কী ধরনের ডাটা বা পোস্ট ব্যবহার করা হচ্ছে এবং তা কোথায় যাচ্ছে। গোপনীয়তার প্রশ্ন তো রয়েছেই, সাথে এটি অপব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করে।

গোপনীয়তার বিষয়টি ছাড়াও আরও একটি উদ্বেগের বিষয় হলো, এই পোস্টগুলো কীভাবে এবং কোথায় ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যবহারকারীরা কি তাদের ডাটার উপর নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন? বিশেষ করে এমন পরিস্থিতিতে যখন এই পোস্টগুলো ব্যক্তিগত মতামত, আবেগ বা ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে লেখা হয়।

তবে, ব্যবহারকারীরা চাইলে তাঁদের পোস্টের তথ্য ব্যবহার করার অনুমতি বাতিল করতে পারবেন। সেটিংস অপশনের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সবাই কি সচেতনভাবে এ সিদ্ধান্ত নেবে? এবং এটি কি যথেষ্ট সুরক্ষা দিতে পারবে?

এ ধরনের গোপনীয়তা নীতিমালা খুবই সংবেদনশীল। অনেক সময় সাধারণ ব্যবহারকারীরা জানেন না কিভাবে এসব নীতি কাজ করে, অথবা সেটিংস পরিবর্তন করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তারা তা এড়িয়ে যান। ফলে, তাদের ডাটা অনিচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহৃত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।

এক্সের এই সিদ্ধান্ত এআই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ প্রশিক্ষণে ডাটার নতুন এক উৎসকে উন্মোচন করেছে। তবে প্রশ্ন থেকে যায়, এআই প্রযুক্তির উন্নতি কি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার বিনিময়ে হবে? যখন বড় বড় কোম্পানিগুলো আমাদের পোস্টগুলো তাদের প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার করে, তখন সেই ডাটা কি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে?

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে আমাদের তথ্য, আমাদের পোস্ট, এমনকি আমাদের দৈনন্দিন চিন্তাভাবনাও হয়ে উঠতে পারে ডাটা। এক্সের নতুন গোপনীয়তা নীতিমালা এটি স্পষ্ট করেছে যে, আমরা এখন এমন একটি সময়ের দিকে যাচ্ছি যেখানে আমাদের তথ্যের মূল্য আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

কিন্তু এই ডাটার ব্যবহার কি আমাদের উপকারে আসবে, না ক্ষতি করবে? গোপনীয়তা কি নিরাপদ থাকবে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর সময়ই দেবে।