উপদেষ্টা ফারুকীকে শ্রীলেখা মিত্রের তাচ্ছিল্য!
- সময় ০১:১৩:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫
- / 86
বাংলাদেশের নির্মাতা হিসাবে জনপ্রিয় হয়েছেন বাংলা টিভি সিরিজ ৪২০ দিয়ে তিনি। নির্মাতা হিসাবে জনপ্রিয়তার পর এখন তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। নিজের মূল পরিচয় কোনটি সেটি নির্ধারণে সম্ভবত ব্যর্থ হয়েছেন এমনটাই মনে করেন শ্রীলেখা মিত্রের অপ্রচারিত/ অপ্রকাশিত সাক্ষাতকার গ্রহণকারী একজন গণমাধ্যমকর্মী।
রাজধানীর একটি থ্রি-স্টার মানের হোটেলের লবিতে বসে, শ্রীলেখা মিত্রের কাছ থেকে অল্প সময় নিয়েছিলেন ওই সাংবাদিক। বিনিময়ে সরাসরি টাকা চেয়েছিলেন শ্রীলেখা মিত্র। কিন্তু টাকা দিয়ে সাক্ষাতকারটি নেননি। কারণ সাংবাদিক মনে করেছেন, উনি তো ঠিকই আছেন। উনার মতো দুই বঙ্গে জনপ্রিয় মধ্য বয়সী এবং রূপবতী নায়িকা তো টাকা চাইতেই পারেন। ওই সাংবাদিকের অফার ছিল, আমি আপনার জন্য উপহার পাঠাবো। উপহার পছন্দ হলে, কথা বলবেন, তা না হলে বলার দরকার নেই।
মোটেও উত্তেজিত ছিলেন না সেই সাংবাদিক তিনি। যথারীতি অফিসে ফিরে এলেন এবং ঠান্ডা মাথায় নিকোটিনের ধোঁয়ায় বুদ ছিলেন কয়েক মিনিট। মিনিটখানেকের মধ্যেই উপহারের কথা চেষ্টা চলছে। সঙ্গে তার ধোঁয়া। চোখের সামনেই তখন ধোঁয়াতে আচ্ছন্ন টেবিলে রাখা পারফিউম এবং সানগ্লাস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য উপস্থাপিকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক (গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, যদিও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টি নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেছেন); তাঁর দেয়া সানগ্লাস এবং পারফিউম পৌঁছে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলো।
শ্রীলেখা মিত্রের সঙ্গে তো ১০ মিনিট কথা বলতেই হবে। এমনটাই জিদ নিয়ে বসে আছেন তিনি। বাংলা অ্যাফেয়ার্সের ডেস্কের সাথে আলাপকালে ওই রিপোর্টার জানান, ‘আগে থেকেই খানিটকা পড়াশোড়া করেছিল শ্রীলেখা মিত্রের বাবা প্রয়াত সন্তোষ মিত্রকে নিয়ে। তিনিও ছিলেন একজন নিয়ে। দুই বঙ্গের হাহাকারের শব্দ তিনি কতটা অনুভব করেন, সিনেমায় তাঁর সিৎকার চিৎকার শোনা গেলেও এ প্রতিবেদকের মূল উদ্দেশ্যই ছিল, উপমহাদেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলা। তিনি সে প্রশ্নের উত্তর দেননি। অংহবোধ দেখিয়ে শুধু এতটুকুই বলেছিলন, যে দেশের একজন জনপ্রিয় পরিচালক ৪২০ বানায়; সে দেশের সাংবাদিকের মান নিয়ে আমার প্রশ্ন থাকতেই পারে। এ কথা শোনার পর কফির বিলটা পরিশোধ করে সাংবাদিক হোটেল ত্যাগ করে পদ্মাপাড়ে যান। যদিও সেদিন বাংলাদেশি সাংবাদিক শ্রীলেখা মিত্রের পূর্ব-পুরুষের বসত ছিল মাদারীপুরের ঘটমাঝি গ্রামের কাছাকাছি গিয়ে ফিরে এসেছিলেন। দেশভাগের সময় বাধ্য হয়ে ভারতে পাড়ি দিতে হয়েছিল শ্রীলেখার পূর্বপুরুষদের। শ্রীলেখার জন্ম ভারতে হলেও বাবার মুখে ঘটমাঝি গ্রামের গল্প শুনে বেড়ে উঠেছেন তিনি।
শ্রীলেখা মিত্র সেদিন কি বলেছিলেন; কেন বলেছিলেন উপদেষ্টা ফারুকীকে নিয়ে (তাচ্ছিল্যের স্বরে) ; সে প্রশ্নের উত্তর তিনি দিয়ে যাননি। নিদারুণ অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রকে এ প্রতিবেদক এরপর কোনোদিন নক করেননি। কারণ হিসাবে, তিনি শুধু বাংলাদেশের জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকীকেই অপমান করেননি; তিনি বাংলাদেশের সাংবাদিকদের (এলিটশ্রেণী বাদে) অপমান করেছিলেন।
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাংলাদেশ ফিল্ম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ‘জাতীয় চলচ্চিত্র সম্মেলন’।
‘সংস্কারে চলচ্চিত্র, পরিবর্তনে দেশ’ প্রতিপাদ্য ধারণ করে আয়োজিত এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিনয়শিল্পী, নির্মাতাসহ সিনেমা সংশ্লিষ্ট চার শতাধিক প্রতিনিধি। সেখানে চলচ্চিত্র সংস্কারের নানান বিষয় নিয়ে কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ও নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
সম্মেলনে আলোচনা করেন চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্য আকরাম খান, জনপ্রিয় গীতিকার ও নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলী, নির্মাতা রায়হান রাফী, প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল, অভিনয়শিল্পী ইমতিয়াজ বর্ষণ, জান্নাতুল ফেরদৌসি ঐশী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিডিয়া সেলের সদস্য মাশরুর আলম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগে বাবা সন্তোষ মিত্রকে নিয়ে পূর্ব-পুরুষের ভিটার খোঁজে বাংলাদেশে এসেছিলেন শ্রীলেখা। ২০২১ সালের করোনা পরবর্তী সমেয় সন্তোষ মিত্র মারা গেছেন।
পিতার মুখের গল্পকে বা চিঠিগুলো প্রকাশের কথা জানিয়েছিলেন গণমাধ্যমকে। পশ্চিমবঙ্গের গ্রহণযোগ্য পত্রিকার একজন সংবাদকর্মীর সঙ্গে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কথা হয়েছে বাংলাদেশি এই সাংবাদিকের। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, শ্রীলেখা মিত্রের এই বিষয়ে কোনো আপডেট আছে কিনা? তিনি বলেন, উনার এত সময় কোথায়? আপনি বাংলাদেশের সাংবাদিক-আমি ভারতের সাংবাদিক। আমরা তথ্য শেয়ার করতেই পারি। কিন্তু শ্রীলেখা মিত্র যদি বাংলাদেশের একজন নির্মাতাকে খাটো করে কথা বলে থাকেন, তাহলে তিনি অন্যায় করেছেন। তাই শ্রীলেখার উচিত বাংলাদেশে গিয়ে ফারুকীর নির্দেশনায় একটি সিনেমায় না নাটকে অভিনয় করা। তাহলেই হয়তে দুইবঙ্গের মেলবন্ধন ঘটবে।