উত্তরায় বসন্ত উৎসব বাতিল: নাগরিক কমিটির বিবৃতি

- সময় ১২:৩৪:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 63
উত্তরায় বসন্ত উৎসব বাতিল হওয়ার পর জাতীয় নাগরিক কমিটির উত্তরা জোন তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে। তারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, জাতীয় নাগরিক কমিটি কোনও ধরনের অনুষ্ঠান বাতিলের ক্ষমতা রাখে না এবং এ ধরনের সংস্কৃতি ভাঙতে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে নাগরিক কমিটির উত্তরা জোনের পক্ষে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সৈয়দ হাসান ইমতিয়াজ একটি লিখিত বিবৃতি গণমাধ্যমে পাঠান।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “বাধার মুখে বাতিল উত্তরার বসন্ত উৎসব” শিরোনামের খবর তাদের নজরে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, তুরাগ থানার জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইমন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করে বিবৃতিতে বলা হয়, তারা সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সব নাগরিক উদ্যোগকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সাংস্কৃতিক স্থিরাবস্থা দূর করে সাংস্কৃতিক গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে তারা কাজ করছে। প্রতিবছরের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলা ও পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের পাশাপাশি উত্তরায় উন্মুক্ত মঞ্চে বসন্ত বরণের প্রস্তুতি নিয়েছিল ‘জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষৎ’
তবে উত্তরার আয়োজকরা জানিয়েছেন, যথাযথ অনুমতি থাকা সত্ত্বেও তারা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করতে পারেননি। উদযাপন পরিষৎ-এর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট জানান, “আমরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অনুমতি নিয়েছি, বরাদ্দকৃত ভেন্যুর জন্য ভাড়াও পরিশোধ করেছি, পুলিশের অনুমতিও ছিল। কিন্তু স্থানীয়দের বাধার কারণে অনুষ্ঠানটি করা সম্ভব হয়নি।”
অভিযোগ উঠেছে, ইমন রহমান ফরহাদ নামে একজনের নেতৃত্বে উৎসব আয়োজন বাধাগ্রস্ত হয়। ইমন, যিনি নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তুরাগ থানার মুখপাত্র হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন, জানান যে, উৎসবের অন্যতম আয়োজক আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ বলে তিনি দাবি করেন। তবে তিনি ওই ব্যক্তির নাম নিশ্চিত করতে পারেননি।
জাতীয় নাগরিক কমিটির উত্তরা জোন জানিয়েছে, তারা তদন্ত করে জানতে পারে যে, বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে উত্তরা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ইমন নামের একজনকে জানানো হয়েছিল যে, উত্তরায় বসন্তবরণ উৎসবের কয়েকজন আয়োজক স্বৈরাচারী দল আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। এরপর নাগরিক কমিটির উত্তরা জোনের দুজন সদস্যকে বিষয়টি তদন্ত করে সিটি করপোরেশনকে জানাতে বলা হয়।
পরবর্তী সময়ে উত্তরা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি স্থানীয় প্রতিবাদ নিয়ে উপ-সচিবের পরামর্শ চাওয়ার পর প্রোগ্রামটি স্থগিত করার নির্দেশ আসে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা পুনরায় স্পষ্ট করতে চাই যে, ফ্যাসিবাদকে সামাজিকভাবে প্রতিহত করতে সাংস্কৃতিক জাগরণ অপরিহার্য। এই ধরনের ঘটনা কেবল নতুন ফ্যাসিবাদ উসকে দেবে। ভবিষ্যতে আমরা এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেব।”