উখিয়ায় যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে আটক ৫
- সময় ১০:৫৬:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 54
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী, পুঁটিবনিয়া নামক এলাকায় রক্তাক্ত অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
নিহতের নাম আরফাত উদ্দিন (২০)। সে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড়ের থাইংখালী, পুঁটিবনিয়া গ্রামের বাসিন্দা হাজি জালাল আহমদ প্রকাশ জালাল হাজির ছেলে।
উক্ত ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. রুবেল বাদি হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৮/১০ জনকে অজ্ঞাত রেখে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
উখিয়া থানার ডিউটি অফিসার উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. সিরাজ জানান, আরফাত উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হল সাদেক হোসেন প্রকাশ সাহাব উদ্দিন (প্রকাশ সাইত্যা), জাহেদ আলম, নুরুল বশর (প্রকাশ আব্বুইয়া), মোহাম্মদ শফি ও তার ছেলে খাইরুল বশর।
গত শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী, শফিউল্লাহ কাটা পুঁটিবনিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফ হোছাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে চুরির অভিযোগে স্থানীয় কয়েকজন লোক নিহত যুবককে মারধর করে। তাঁরা নিহতের প্রতিবেশী বলে জানতে পেরেছি। মারধরের পর তাঁকে পালংখালী শফিউল্লাহ কাটা সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের সামনের খেলার মাঠের পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় নির্যাতনকারীরা।”
ওসি মোহাম্মদ আরিফ হোছাইন বলেন, “সেনাবাহিনীর সদস্যরা রক্তাক্ত অবস্থায় ঐ যুবককে উদ্ধার করে পালংখালী তাজমান হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় কারা জড়িত রয়েছে তা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থাগ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।”
নিহত যুবক আরফাত উদ্দিন কে পূর্বপরিকল্পিতভাবে স্থানীয় একটি পক্ষ পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁর পিতা হাজী জালাল আহমদ। তিনি ছেলে হত্যার সঠিক বিচার দাবী করেন।
নিহত যুবকের বড় ভাই মো. রুবেল গণমাধ্যম কর্মীদের অভিযোগ করে বলেন, “থাইংখালী পুঁটিবনিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুল্লাহ ছেলে সাদেক হোসেন প্রকাশ সাহাব উদ্দিন (প্রকাশ সাইত্যা) (৩৯), মৃত: বদি আলম এর ছেলে জাহেদ আলম (২৮), আব্দুল খালেক এর ছেলে নুরুল বশর (প্রকাশ আব্বুইয়া) (২৬), মৃত: আইয়ুবুল ইসলাম এর ছেলে আবুল হাসেম (৩২), মো: আব্দুল্লাহ এর ছেলে কাউছার উদ্দিন (২৫), মৃত: কবির আহমদ এর ছেলে মো. শফি (৫৫) ও তার ছেলে গফুর আলম (৩৫), আব্দুল খালেক এর ছেলে খাইরুল বশর (২০), মৃত: বদি আলম এর ছেলে ফরিদ আলম (৩০), আবু তাহের এর ছেলে জুহুর আলম (প্রকাশ আব্বুইয়া) (২৫) সহ ৮/১০ জন সন্ত্রাসী শনিবার বিকাল ৪ টার দিকে চুরির অভিযোগে তাঁকে ধরেনিয়ে গিয়ে দফায় দফায় মারধর করেন।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “আমার ভাইকে তাঁরা পিটিয়ে হত্যা করেছে। মেরে সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের সামনে খেলার মাঠের পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে। আমার ভাইয়ের হত্যার সাথে যারা জড়িত তাঁদের বিচার দাবি করছি।
তিনি বলেন, একইভাবে আমার আর এক ভাই জসিম উদ্দিনকে তাদের সহযোগীরা ২০১২ সালে গলা কেটে হত্যা করেছিল। এক ভাইয়ের হত্যার বিচার শেষ হয়নি এখনো। জসিম উদ্দিনকে যারা হত্যা করেছিল তাদের সহযোগীরাই এ ঘটনায় জড়িত বলে দাবি করেন তিনি।”
“১২ বছরের ব্যবধানে একই পরিবারের দুই ভাইকে হত্যার ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”
এদিকে নিহত যুবক আরফাত উদ্দিন এর মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার বিকালে গ্রামের বাড়ি পুটিবনিয়াতে দাফন সম্পন্ন করা হয়।