০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইতালির স্বপ্নে লাশ সেলিম: দালালের প্রতারণার শিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
  • সময় ১১:৪৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 45

দালালের প্রতারণার শিকার সেলিম

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আলাইপুর গ্রামের সেলিম হোসেন (২৫) পরিবারের অভাব মোচনের স্বপ্নে ইতালি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দালালদের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে ইতালি পৌঁছানোর আশায় তার বাবা আফজাল হোসেন সাড়ে ১২ লাখ টাকার চুক্তি করেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে যায়, সেলিম আর ফিরে আসেননি।

২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর সেলিমকে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুদিন পর দালালরা দাবি করে, তিনি লিবিয়ায় আটকা পড়েছেন এবং মুক্তির জন্য আরও ২৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। ছেলেকে বাঁচানোর আশায় আফজাল হোসেন জমি বিক্রি করে ১৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেন। পর্যায়ক্রমে মোট ৩১ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়।

এরপরও সেলিমের কোনো খোঁজ মেলেনি। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার দালালরা জানায়, ইতালি যাওয়ার পথে স্ট্রোক করে মারা গেছেন সেলিম।

সেলিমের বাবা আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি ছেলেকে অন্তত একবার শেষবারের মতো দেখতে চেয়েছি, কিন্তু তারা কোনো ভিডিও দেখায়নি। আমার বিশ্বাস, সেলিম দালাল চক্রের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে।’

সেলিমের ছোট ভাই ইমন হোসেন জানান, ‘দালালরা বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও দুই বিঘা জমি লিখে নিয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে।’

অভিযুক্ত দালাল শহীদ হোসেন ও আবদুল বারীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া মেলেনি।

এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি আ ফ ম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।’ তবে এখনো পর্যন্ত কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবার শোকাহত। এ ঘটনা অভিবাসনের নামে প্রতারণার নির্মম বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে এসেছে।

শেয়ার করুন

ইতালির স্বপ্নে লাশ সেলিম: দালালের প্রতারণার শিকার

সময় ১১:৪৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আলাইপুর গ্রামের সেলিম হোসেন (২৫) পরিবারের অভাব মোচনের স্বপ্নে ইতালি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দালালদের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে ইতালি পৌঁছানোর আশায় তার বাবা আফজাল হোসেন সাড়ে ১২ লাখ টাকার চুক্তি করেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে যায়, সেলিম আর ফিরে আসেননি।

২০২৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর সেলিমকে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুদিন পর দালালরা দাবি করে, তিনি লিবিয়ায় আটকা পড়েছেন এবং মুক্তির জন্য আরও ২৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। ছেলেকে বাঁচানোর আশায় আফজাল হোসেন জমি বিক্রি করে ১৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেন। পর্যায়ক্রমে মোট ৩১ লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়।

এরপরও সেলিমের কোনো খোঁজ মেলেনি। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার দালালরা জানায়, ইতালি যাওয়ার পথে স্ট্রোক করে মারা গেছেন সেলিম।

সেলিমের বাবা আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি ছেলেকে অন্তত একবার শেষবারের মতো দেখতে চেয়েছি, কিন্তু তারা কোনো ভিডিও দেখায়নি। আমার বিশ্বাস, সেলিম দালাল চক্রের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছে।’

সেলিমের ছোট ভাই ইমন হোসেন জানান, ‘দালালরা বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও দুই বিঘা জমি লিখে নিয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে।’

অভিযুক্ত দালাল শহীদ হোসেন ও আবদুল বারীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া মেলেনি।

এ বিষয়ে বাঘা থানার ওসি আ ফ ম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।’ তবে এখনো পর্যন্ত কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবার শোকাহত। এ ঘটনা অভিবাসনের নামে প্রতারণার নির্মম বাস্তবতাকে সামনে নিয়ে এসেছে।