আলোচিত সাবেক এমপি একরামুল করিম চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার
- সময় ০৪:১৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ অক্টোবর ২০২৪
- / 263
নোয়াখালী ৪ আসনের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে চট্টগ্রামের খুলশি থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মঙ্গলবার রাতে নগরীর খুলশী এলাকার আব্দুল মালেক লেইন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. শরীফ-উল-আলম। তাকে ২০১৩ সালে নোয়াখালীতে খোকন (১৭) নামে এক পরিবহন শ্রমিক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে ১০ লাখ নগদ টাকাসহ বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা উদ্ধারের তথ্য দিয়েছে পুলিশের বিশেষ এ ইউনিট।
নোয়াখালী সদর ও সুবর্নচর উপজেলা মিলে গঠিত নোয়াখালী- ৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম সরকার পতনের বেশ কিছু দিন আগে থেকেই আলোচনা ছিলেন। বিভিন্ন রকম বক্তব্য দিয়েও তিনি সময়ে সময়ে আলোচনা তৈরি করেছেন।
তার বিরুদ্ধে এলাকায় পরিবারতন্ত্র কায়েমের অভিযোগও করেছেন তার দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। তিনি সংসদ সদস্য হওয়ার পর তার স্ত্রী কামরুন নাহার শিউলী নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হন। গত মে মাসে সুবর্নচর উপজেলা নির্বাচনে তার ছেলে শাবাব করিম চৌধুরী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর বাইরে ভাই সুন্দলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, তার ভাতিজা জহিরুল হক রায়হান কবিরহাট পৌরসভার মেয়র।
স্থানীয়দের অভিযোগ তার পরিবারের অন্তত একডজন সদস্যকে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করেছেন একরামুল।
মঙ্গলবার রাতে একরামুলকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব বলেছে, ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি-জামায়াতের ডাকে দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে সোনাপুর-মাইজদী সড়কের দত্তের হাট এলাকায় হরতালের পক্ষের লোকজনের মিছিলে গুলি চালায় হরতাল বিরোধীরা।
সেসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে পরিবহন শ্রমিক মো. খোকন (১৭) নিহত হন। এ ঘটনায় খোকনের বাবা মজিবুল হক নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানায় একরামুল করিমসহ ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-২৫০ জনকে আসামি করে গত ৮ সেপ্টেম্বর একটি হত্যা মামলা করেন।
ওই মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একরামুল করিম নগরীর খুলশীতে অবস্থানের বিষয়টি জানতে পারে র্যাব-৭। পরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের কথা বলা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শরীফ-উল-আলম বলেন, “মামলা হওয়ার পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে তিনি (একরামুল করিম) আত্মগোপনে ছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
“তার বিরুদ্ধে নোয়াখালীর কবিরহাট থানায় অস্ত্র আইনে একটি, সুধারাম থানায় একটি হত্যা ও একটি বিস্ফোরক আইনের মামলা, সোনাইমুড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা এবং ঢাকার আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা আছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।”
এই পাঁচটি মামলাই ২০ অগাস্ট থেকে শুরু করে গত সেপ্টেম্বর মাসে বিভিন্ন সময়ে হয়েছে।
গ্রেপ্তারের পর একরামুল করিমকে খুলশী থানায় হস্তান্তরের তথ্য দিয়ে র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এরপর তাকে মামলা সংক্রান্তে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে নোয়াখালী জেলার সুধারাম মডেল থানা পুলিশের কাছে পাঠানো হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসময় একরামুলের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা, ১৬ হাজার ২০০ ডলার, দুই হাজার ১২৪ সিঙ্গাপুরি ডলার জব্দ করা হয়।