ঢাকা ০৯:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আট এজেন্ডা নিয়ে মোদি ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক

বিশেষ প্রতিনিধি
  • সময় ০৯:৩৭:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 83

মোদি- ট্রাম্প (ফাইল ফটো)

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছেছেন। দুই দিনের এই সফরে বাণিজ্য, শুল্ক, অভিবাসন, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, মূলত আটটি এজেন্ডা নিয়েই বৈঠক হবে দীর্ঘদিনের বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী মোদির টেসলার সিইও ইলন মাস্কের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর।

গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার আট এজেন্ডাগুলো হচ্ছে:

শুল্ক ও বাণিজ্য

ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে, যা ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্য উদ্বেগের বিষয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি এই শুল্ক নীতির প্রভাব কমানোর জন্য আলোচনা করবেন এবং ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্প্রসারণের উপায় নিয়ে কথা বলবেন।

অভিবাসন নীতি

ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি ভারতীয় শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবীদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই বিষয়ে ভারতের উদ্বেগ উত্থাপন এবং নীতির প্রভাব কমানোর উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।

প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা

দুই নেতা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় এবং যৌথ নিরাপত্তা উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করবেন। ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি আমদানিতে আগ্রহী।

মোদি-ট্রাম্প (ফাইল ফটো)
মোদি-ট্রাম্প (ফাইল ফটো)

জ্বালানি ও পরিবেশ

জ্বালানি নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহযোগিতা এই বৈঠকের অন্যতম বিষয়। ভারত মার্কিন প্রাকৃতিক গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি সম্পদ আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে।

প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন

প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সাইবার নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হবে। ইলন মাস্কের সঙ্গে বৈঠকে প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল

এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ে দুই নেতা আলোচনা করবেন। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।

আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যু

ইউক্রেন সংকট, পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে। দুই নেতা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সহযোগিতা জোরদার করবেন।

ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ

গত তিন দশক ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা ভারতের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। চীনের উত্থানের মুখে ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ট্রাম্প বাণিজ্য নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং ভারতকে শুল্ক অপব্যবহারকারী দেশ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

মোদি তার প্রথম মেয়াদ থেকেই ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে সক্রিয় ছিলেন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মোদি ট্রাম্পকে গুজরাটে বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানান, যেখানে এক লাখেরও বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। চলতি বছরের শেষের দিকে ট্রাম্প কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে ভারত সফর করতে পারেন। কোয়াড হলো অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের চারপক্ষীয় জোট।

শেয়ার করুন

আট এজেন্ডা নিয়ে মোদি ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক

সময় ০৯:৩৭:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছেছেন। দুই দিনের এই সফরে বাণিজ্য, শুল্ক, অভিবাসন, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। ভারতীয় কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, মূলত আটটি এজেন্ডা নিয়েই বৈঠক হবে দীর্ঘদিনের বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী মোদির টেসলার সিইও ইলন মাস্কের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর।

গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার আট এজেন্ডাগুলো হচ্ছে:

শুল্ক ও বাণিজ্য

ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে, যা ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্য উদ্বেগের বিষয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি এই শুল্ক নীতির প্রভাব কমানোর জন্য আলোচনা করবেন এবং ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্প্রসারণের উপায় নিয়ে কথা বলবেন।

অভিবাসন নীতি

ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি ভারতীয় শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবীদের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এই বিষয়ে ভারতের উদ্বেগ উত্থাপন এবং নীতির প্রভাব কমানোর উপায় নিয়ে আলোচনা হবে।

প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা

দুই নেতা প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় এবং যৌথ নিরাপত্তা উদ্যোগ নিয়ে আলোচনা করবেন। ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি আমদানিতে আগ্রহী।

মোদি-ট্রাম্প (ফাইল ফটো)
মোদি-ট্রাম্প (ফাইল ফটো)

জ্বালানি ও পরিবেশ

জ্বালানি নিরাপত্তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহযোগিতা এই বৈঠকের অন্যতম বিষয়। ভারত মার্কিন প্রাকৃতিক গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি সম্পদ আমদানিতে আগ্রহ দেখিয়েছে।

প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন

প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সাইবার নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা হবে। ইলন মাস্কের সঙ্গে বৈঠকে প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল

এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিয়ে দুই নেতা আলোচনা করবেন। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে একসঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।

আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যু

ইউক্রেন সংকট, পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে। দুই নেতা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় সহযোগিতা জোরদার করবেন।

ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ

গত তিন দশক ধরে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা ভারতের সাথে সম্পর্ক জোরদার করতে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। চীনের উত্থানের মুখে ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ট্রাম্প বাণিজ্য নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং ভারতকে শুল্ক অপব্যবহারকারী দেশ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

মোদি তার প্রথম মেয়াদ থেকেই ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে সক্রিয় ছিলেন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মোদি ট্রাম্পকে গুজরাটে বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানান, যেখানে এক লাখেরও বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। চলতি বছরের শেষের দিকে ট্রাম্প কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে ভারত সফর করতে পারেন। কোয়াড হলো অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের চারপক্ষীয় জোট।