০২:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগামী সপ্তাহে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • সময় ১০:০১:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 28

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

সংস্কারের সুপারিশ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে প্রস্তুত করা হবে “জুলাই চার্টার”, যার ভিত্তিতেই সুপারিশ বাস্তবায়নের পথ নির্ধারিত হবে। এদিকে, প্রশাসনিক সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার ছাত্রনেতারা। তারা দ্রুততম সময়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচারও চান।

স্বৈরশাসনের পতনের পর ভেঙে পড়া রাষ্ট্রীয় কাঠামো পুনর্গঠনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত এসব কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, জনপ্রশাসনের পদোন্নতি, পুলিশের নিরপেক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণসহ প্রায় দুই হাজার সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় জানিয়েছে, এসব সুপারিশ নিয়ে দ্রুতই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হবে, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই আলোচনার ভিত্তিতেই গৃহীত হবে “জুলাই চার্টার” এবং তার আলোকে সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মূল দায়িত্ব হবে ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা।’

সংস্কার কমিশনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা
সংস্কার কমিশনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা

এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলছেন, প্রশাসনিক কাঠামোই সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রধান বাধা। তাদের মতে, অনেক আমলা সরকারকে যথাযথভাবে সহযোগিতা করছে না, ফলে প্রশাসন ঢেলে সাজানো জরুরি।

আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘যে সরকারই আসুক, যদি প্রশাসনের বর্তমান জটিল ও অকার্যকর কাঠামো টিকে থাকে, তাহলে কোনো কার্যকর পরিবর্তন সম্ভব হবে না।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সংস্কারের পাশাপাশি জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা দরকার। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক ঐক্য গঠনের ওপরও তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা কি আবার সেই স্বৈরতান্ত্রিক, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার ফাঁদে পড়ব? এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চাইলে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, গত ১৬ বছরে সংঘটিত গুম, খুন, ভোটাধিকার হরণের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনাই এখন সবচেয়ে জরুরি।

শেয়ার করুন

আগামী সপ্তাহে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক

সময় ১০:০১:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সংস্কারের সুপারিশ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে প্রস্তুত করা হবে “জুলাই চার্টার”, যার ভিত্তিতেই সুপারিশ বাস্তবায়নের পথ নির্ধারিত হবে। এদিকে, প্রশাসনিক সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার ছাত্রনেতারা। তারা দ্রুততম সময়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচারও চান।

স্বৈরশাসনের পতনের পর ভেঙে পড়া রাষ্ট্রীয় কাঠামো পুনর্গঠনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত এসব কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, জনপ্রশাসনের পদোন্নতি, পুলিশের নিরপেক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণসহ প্রায় দুই হাজার সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় জানিয়েছে, এসব সুপারিশ নিয়ে দ্রুতই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হবে, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই আলোচনার ভিত্তিতেই গৃহীত হবে “জুলাই চার্টার” এবং তার আলোকে সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হবে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মূল দায়িত্ব হবে ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা।’

সংস্কার কমিশনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা
সংস্কার কমিশনের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা

এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলছেন, প্রশাসনিক কাঠামোই সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রধান বাধা। তাদের মতে, অনেক আমলা সরকারকে যথাযথভাবে সহযোগিতা করছে না, ফলে প্রশাসন ঢেলে সাজানো জরুরি।

আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘যে সরকারই আসুক, যদি প্রশাসনের বর্তমান জটিল ও অকার্যকর কাঠামো টিকে থাকে, তাহলে কোনো কার্যকর পরিবর্তন সম্ভব হবে না।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সংস্কারের পাশাপাশি জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা দরকার। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক ঐক্য গঠনের ওপরও তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা কি আবার সেই স্বৈরতান্ত্রিক, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার ফাঁদে পড়ব? এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চাইলে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, গত ১৬ বছরে সংঘটিত গুম, খুন, ভোটাধিকার হরণের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শাস্তির আওতায় আনাই এখন সবচেয়ে জরুরি।