বিএনপি জামায়াতকে ছাড় দেবে না
“আওয়ামী লীগের ‘আ’ লিখতে ১০ বছর লাগবে”

- সময় ১১:৪৬:২১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / 43
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিরোধ, আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন, স্বৈরাচার বিরোধী বিচার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কিশোরগঞ্জের পুরাতন স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম এবং সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।
আওয়ামী লীগ নিয়ে ফজলুর রহমানের মন্তব্য
ফজলুর রহমান তার বক্তব্যে আওয়ামী লীগকে কটাক্ষ করে বলেন, “আল্লাহর কাছে বলেছিলাম, শেখ হাসিনার পতন না দেখে যেন মৃত্যু না হয়। আল্লাহ আমার কথা শুনেছেন। আওয়ামী লীগের ‘আ’ লিখতে ১০ বছর লাগবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমি আগেই বলেছিলাম, একদিন এমন সময় আসবে, যখন গেটের সামনে লেখা থাকবে—এই এলাকায় আওয়ামী লীগ বসবাস করে না। আজ সেটাই বাস্তব হতে যাচ্ছে।”
ভারত ও নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্তব্য
ভারত সরকার সম্পর্কে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ভারত যদি আমাদের ভাই ডাকে, তাহলে আমরা দাদা ডাকবো। ভারত যদি বন্ধু বলে, তাহলে বন্ধুত্ব করবো। কিন্তু শেখ হাসিনাকে অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় রাখতে তাদের ভূমিকা আমরা সমর্থন করতে পারি না।”
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “প্রথমে জাতীয় নির্বাচন হবে, তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে। বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না। দেশের ১৮ কোটি মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে। কোনো চক্রান্ত করা হলে বিএনপি সেটার জবাব দেবে।”
বিএনপি ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ফজলুর রহমান দাবি করেন, “এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ভোট পাবে। কিন্তু আমাদের চক্রান্ত করে বঞ্চিত করা হচ্ছে। যারা দেশকে আবার পাকিস্তানের পথে নিতে চায়, তাদের চরিত্রের কোনো পরিবর্তন হয়নি।”
তিনি বলেন, “আমরা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ চাই, জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশ চাই, বহুদলীয় গণতন্ত্র চাই। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলে যার যার আদর্শ পালন করবে, এমন একটি বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যেই বিএনপি কাজ করছে।”
জামায়াত ও নির্বাচন ব্যবস্থা প্রসঙ্গে
জামায়াত ইসলামী প্রসঙ্গে ফজলুর রহমান বলেন, “আমি জামায়াতকে শত্রু মনে করি না। কোনো দলকে শত্রু মনে করি না। তবে যারা আইয়ুব খান বা এরশাদের মতো স্বৈরাচারী কৌশলে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে চায়, বিএনপি তাদের ছাড় দেবে না।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপির সঙ্গে ৯০ শতাংশ গণতান্ত্রিক দল একমত। আমরা অবাধ, সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন চাই এবং তা দীর্ঘায়িত করতে দেওয়া হবে না। আমরা সরকারের ওপর আস্থা রাখতে চাই, কিন্তু সেই বিশ্বাসের সঙ্গে কেউ প্রতারণা করলে তা সহ্য করা হবে না।”
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিসেস লায়লা বেগম, শেখ মুজিবুর রহমান ইকবাল, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রেজাউল করিম খান চুন্নু, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, রুহুল হোসাইন, অ্যাডভোকেট জালাল মুহাম্মদ গাউস, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, আমিনুল ইসলাম আশফাক, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাজুল ইসলাম চপল, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সুমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবু নাসের সুমন, সদস্যসচিব শহীদুল্লাহ কায়সার, ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহম্মেদ নেভীনসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।