০২:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ ২০২৫, ২০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অস্ট্রেলিয়ার দাপট নাকি ভারতের প্রতিশোধ

ক্রীড়া ডেস্ক
  • সময় ১১:৫৫:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫
  • / 4

অষ্ট্রেলিয়া দাপট নাকি ভারতের প্রতিশোধ

‘ভরা গ্যালারিকে স্তব্ধ করে দেওয়ার আনন্দই আলাদা’—২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর আহমেদাবাদে এই কথাটি বলেছিলেন প্যাট কামিন্স। আজ দুবাইয়ের স্টেডিয়ামেও থাকবে ভারতীয় সমর্থকদের জোয়ার। তবে কামিন্স অনুপস্থিত হলেও, স্মিথ-ম্যাক্সওয়েলরা যে তাঁর সেই কথাকে বাস্তবে রূপ দিতে চাইবেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ভারতের মনে তাই একটাই প্রশ্ন—আহমেদাবাদের মতো আরেকবার কি হৃদয় ভেঙে দেবে অস্ট্রেলিয়া? নাকি প্রতিশোধের মঞ্চ প্রস্তুত করেছে রোহিত শর্মার দল? মরুর বুকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে কার বাজিমাত হবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

অস্ট্রেলিয়ার গ্রুপপর্বটা খুব একটা সহজ ছিল না। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে, এরপর হঠাৎ করেই দুবাইতে উড়ে আসতে হয়েছে সেমিফাইনালের জন্য। দলের নিয়মিত ছয়জন খেলোয়াড় নেই—বিশেষ করে কামিন্স, স্টার্ক ও হ্যাজেলউডের অনুপস্থিতি বেশ বড় ধাক্কা। কিন্তু দলটি যে অস্ট্রেলিয়া, সেটাই তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। আইসিসি টুর্নামেন্ট মানেই যেন অসিদের দাপট। হলুদ জার্সি পরে অপরিচিত জনসন-ইংলিসরাও হয়ে ওঠেন ভয়ংকর, যেমনটা ২০২৩ বিশ্বকাপ ফাইনালে করেছিলেন ট্রাভিস হেড।

সেই ম্যাচেই ভারতের ২৪০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫০ রানের আগেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু হেডের ১৩৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে এক নিমিষেই ভারতের স্বপ্নভঙ্গ হয়। তার আগেই ওভালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও ভারতকে কাঁদিয়েছিলেন হেড। এবারও কি সেই চেনা দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হবে? নাকি অন্য কেউ হয়ে উঠবেন ট্রাভিস হেড? হয়তো স্মিথ, ম্যাক্সওয়েল বা নতুন কেউ ভারতকে হতাশার স্বাদ দেবেন!

এই দুঃসহ স্মৃতি ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মার মনে গেঁথে থাকার কথা। তবে প্রতিশোধ শব্দটি এড়িয়ে যেতে চান তিনি। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে রোহিত বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া সবসময় কঠিন প্রতিপক্ষ। আমরা গত তিন ম্যাচে যেমন খেলেছি, এখানেও সেই পরিকল্পনা নিয়ে নামব।’

অস্ট্রেলিয়ার নিয়মিত ছয়জন না থাকলেও দলটি যে সর্বদা লড়াকু, তা ভালোই জানেন ভারতীয় অধিনায়ক। তাই জয়ের জন্য নিজেদের পরিকল্পনার ওপরই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি, ‘সেমিফাইনালে দুদলের ওপরই চাপ থাকে। আমাদের মনোযোগ দিতে হবে, যাতে নিজেদের পরিকল্পনা শতভাগ কার্যকর করতে পারি।’

ভারতের একাদশ নিয়ে কিছুটা দোটানা রয়েছে। বিশেষ করে বরুন চক্রবর্তীর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স টিম ম্যানেজমেন্টের সামনে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেট নেওয়া বরুনকে বাদ দেওয়ার ঝুঁকি হয়তো নেবে না ভারত। ফলে দুবাইয়ের মন্থর উইকেটে চার স্পিনার নিয়ে নামতে পারে তারা, আর সেই কারণে একাদশের বাইরে থাকতে পারেন পেসার হার্সিত রানা।

অস্ট্রেলিয়াও ভারতের স্পিন আক্রমণের কথা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে। অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শুধু বরুন নয়, ভারতের সব স্পিনারই দুর্দান্ত। তাদের বিপক্ষে আমাদের ব্যাটিং কেমন হয়, বিশেষ করে মাঝের ওভারগুলোতে, সেটাই আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।’

দুবাইয়ের আবহাওয়া আজ শুষ্ক থাকবে, ফলে অস্ট্রেলিয়ার আগের দুই ম্যাচের মতো এবার বৃষ্টির কোনো বাধা আসার সম্ভাবনা নেই। সবকিছু ঠিক থাকলে এক হাইভোল্টেজ সেমিফাইনাল অপেক্ষা করছে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য। এখন দেখার বিষয়—ভারত প্রতিশোধ নেয়, নাকি অস্ট্রেলিয়া আরেকবার তাদের দাপট দেখায়!

শেয়ার করুন

অস্ট্রেলিয়ার দাপট নাকি ভারতের প্রতিশোধ

সময় ১১:৫৫:৫২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ মার্চ ২০২৫

‘ভরা গ্যালারিকে স্তব্ধ করে দেওয়ার আনন্দই আলাদা’—২০২৩ সালের ১৮ নভেম্বর আহমেদাবাদে এই কথাটি বলেছিলেন প্যাট কামিন্স। আজ দুবাইয়ের স্টেডিয়ামেও থাকবে ভারতীয় সমর্থকদের জোয়ার। তবে কামিন্স অনুপস্থিত হলেও, স্মিথ-ম্যাক্সওয়েলরা যে তাঁর সেই কথাকে বাস্তবে রূপ দিতে চাইবেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ভারতের মনে তাই একটাই প্রশ্ন—আহমেদাবাদের মতো আরেকবার কি হৃদয় ভেঙে দেবে অস্ট্রেলিয়া? নাকি প্রতিশোধের মঞ্চ প্রস্তুত করেছে রোহিত শর্মার দল? মরুর বুকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে কার বাজিমাত হবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

অস্ট্রেলিয়ার গ্রুপপর্বটা খুব একটা সহজ ছিল না। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে, এরপর হঠাৎ করেই দুবাইতে উড়ে আসতে হয়েছে সেমিফাইনালের জন্য। দলের নিয়মিত ছয়জন খেলোয়াড় নেই—বিশেষ করে কামিন্স, স্টার্ক ও হ্যাজেলউডের অনুপস্থিতি বেশ বড় ধাক্কা। কিন্তু দলটি যে অস্ট্রেলিয়া, সেটাই তাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। আইসিসি টুর্নামেন্ট মানেই যেন অসিদের দাপট। হলুদ জার্সি পরে অপরিচিত জনসন-ইংলিসরাও হয়ে ওঠেন ভয়ংকর, যেমনটা ২০২৩ বিশ্বকাপ ফাইনালে করেছিলেন ট্রাভিস হেড।

সেই ম্যাচেই ভারতের ২৪০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫০ রানের আগেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু হেডের ১৩৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে এক নিমিষেই ভারতের স্বপ্নভঙ্গ হয়। তার আগেই ওভালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেও ভারতকে কাঁদিয়েছিলেন হেড। এবারও কি সেই চেনা দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হবে? নাকি অন্য কেউ হয়ে উঠবেন ট্রাভিস হেড? হয়তো স্মিথ, ম্যাক্সওয়েল বা নতুন কেউ ভারতকে হতাশার স্বাদ দেবেন!

এই দুঃসহ স্মৃতি ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মার মনে গেঁথে থাকার কথা। তবে প্রতিশোধ শব্দটি এড়িয়ে যেতে চান তিনি। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে রোহিত বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়া সবসময় কঠিন প্রতিপক্ষ। আমরা গত তিন ম্যাচে যেমন খেলেছি, এখানেও সেই পরিকল্পনা নিয়ে নামব।’

অস্ট্রেলিয়ার নিয়মিত ছয়জন না থাকলেও দলটি যে সর্বদা লড়াকু, তা ভালোই জানেন ভারতীয় অধিনায়ক। তাই জয়ের জন্য নিজেদের পরিকল্পনার ওপরই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি, ‘সেমিফাইনালে দুদলের ওপরই চাপ থাকে। আমাদের মনোযোগ দিতে হবে, যাতে নিজেদের পরিকল্পনা শতভাগ কার্যকর করতে পারি।’

ভারতের একাদশ নিয়ে কিছুটা দোটানা রয়েছে। বিশেষ করে বরুন চক্রবর্তীর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স টিম ম্যানেজমেন্টের সামনে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেট নেওয়া বরুনকে বাদ দেওয়ার ঝুঁকি হয়তো নেবে না ভারত। ফলে দুবাইয়ের মন্থর উইকেটে চার স্পিনার নিয়ে নামতে পারে তারা, আর সেই কারণে একাদশের বাইরে থাকতে পারেন পেসার হার্সিত রানা।

অস্ট্রেলিয়াও ভারতের স্পিন আক্রমণের কথা মাথায় রেখেই পরিকল্পনা সাজাচ্ছে। অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শুধু বরুন নয়, ভারতের সব স্পিনারই দুর্দান্ত। তাদের বিপক্ষে আমাদের ব্যাটিং কেমন হয়, বিশেষ করে মাঝের ওভারগুলোতে, সেটাই আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ করবে।’

দুবাইয়ের আবহাওয়া আজ শুষ্ক থাকবে, ফলে অস্ট্রেলিয়ার আগের দুই ম্যাচের মতো এবার বৃষ্টির কোনো বাধা আসার সম্ভাবনা নেই। সবকিছু ঠিক থাকলে এক হাইভোল্টেজ সেমিফাইনাল অপেক্ষা করছে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য। এখন দেখার বিষয়—ভারত প্রতিশোধ নেয়, নাকি অস্ট্রেলিয়া আরেকবার তাদের দাপট দেখায়!