ঢাকা ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সান্ডা খাওয়া কি হালাল?

সান্ডা ও কফিলের ছেলে নিয়ে এতো হইচই কেন?

নিউজ ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট ০১:১৮:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • / 863

সান্ডার বিরিয়ানি আরব দেশে বেশ জনপ্রিয়

সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করলেই চোখে পড়ে, সান্ডা ফোঁস করছে, আর কফিলের ছেলে হাসছে। এক নতুন ট্রেন্ডে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। কিন্তু হঠাৎ কেন এই ‘সান্ডা’? আর ‘কফিলের ছেলে’ই বা কে?

বৃটানিকার তথ্য অনুযায়ী, ‘সান্ডা’ আসলে স্পাইনি টেইলড লিজার্ড বা কাঁটাযুক্ত লেজওয়ালা টিকটিকি। এর বৈজ্ঞানিক নাম ইউরোমাস্টিক্স। এটি অ্যাগামিডি গোত্রের অন্তর্গত, এর এক ডজনের বেশি প্রজাতি রয়েছে।

‘সান্ডা’ কোনো নির্দিষ্ট প্রাণীর নাম নয়। মরু অঞ্চলে বাস করা এই গোত্রের বেশ কয়েকটি প্রজাতিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। আরবি ভাষায় একে বলা হয় ‘দব’। মরুভূমিতে বসবাসকারী এই গোত্রের লিজার্ডদেরই সাধারণভাবে ‘সান্ডা’ বলা হয়।

এর দেহ টিকটিকির মতো, লেজ কাঁটায় ভরা। তাপমাত্রা অনুযায়ী এরা রঙ বদলাতে পারে। গরমে শরীর হালকা, ঠান্ডায় গাঢ়- এভাবেই বেঁচে থাকে মরুভূমিতে।

এদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল উত্তর আফ্রিকা থেকে শুরু করে ভারতের মরু অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। দিনের বেলা রোদ পোহায়, আর সন্ধ্যায় গর্তে আশ্রয় নেয়। খাদ্য তালিকায় রয়েছে গাছের পাতা, ফলমূল ও ছোট পোকামাকড়।

মরুর বেদুঈনরা অনেকেই এই সান্ডা ধরে খায়। কেউ কেউ তো সান্ডার বিরিয়ানিও রান্না করেন! বিষয়টি মজার হলেও বাস্তব। এইসব ঘটনাই রসিকতা ও কৌতুকে পরিণত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

সান্ডা শব্দটি এখন আর মরুভূমির প্রাণী নয়। এটি এক ধরনের প্রতীক, এক ধরনের অনলাইন হিউমারের কোরে পরিণত হয়েছে। এর পেছনে রয়েছে কিছু প্রবাসী বাংলাদেশির নির্মল হাস্যরস ও বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।

মরুভূমির প্রাণীর প্রজাতি সান্ডা
মরুভূমির প্রাণীর প্রজাতি সান্ডা

অন্যদিকে ‘কফিল’ শব্দটি এসেছে আরবি ভাষা থেকে। মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়োগকর্তাকে বলা হয় ‘কফিল’। আর সেই কফিলের সন্তানেরাই আজ মিম ও রিলসের মাধ্যমে পরিচিত ‘কফিলের ছেলে’ নামে। তারা কেমন পোশাক পরে, কীভাবে ঘোরে- সবই যেন এখন একেকটা কৌতুকের খোরাক।

এই ট্রেন্ডের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে কিছু বাংলাদেশি ভ্লগার। তাদের মধ্যে একজন হলেন আবদুল মান্নান। তিনি সৌদি আরবের দাম্মামে থাকেন, পেশায় উট ও ছাগল চরান। ফাঁকে ফাঁকে তৈরি করেন ভিডিও, যেখানে দেখা যায় মরুভূমির জীবজগৎ- বিশেষ করে ‘সান্ডা’ নামক প্রাণীটি।

এই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ৬.৮ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ দেখে ফেলেছে। এমনকি সান্ডার এই ‘ফঁস ফঁস’ শব্দ এখন মিমের অংশ হয়ে গেছে।

‘সান্ডা’ এখন শুধু একটি প্রাণী নয়, এটি একটি কালচারাল ফেনোমেনা। এটি দেখিয়ে দেয়, মানুষ কত সহজে জীবনের ছোট ছোট বিষয়কে নিয়ে হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করতে পারে।

সান্ডা খাওয়া কি হালাল?

সান্ডা, দব ও গুইসাপ—এই তিনটি প্রাণী দেখতে কাছাকাছি হলেও ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী এগুলোর খাদ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা ভিন্ন। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রচলিত প্রাণী সান্ডা এক ধরনের উভচর সরীসৃপ, যা দেখতে অনেকটা গুইসাপের মতো। ইসলামী শরিয়াহ—বিশেষ করে হানাফি মাজহাব অনুসারে—সান্ডা খাওয়া স্পষ্টভাবে হারাম। আরব অঞ্চলে সাধারণত এ প্রাণী দেখা যায় না এবং সেখানকার মুসলমানরা একে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করেন না।

অন্যদিকে দব মূলত আরবের মরু অঞ্চলের প্রাণী, যা সম্পর্কে সহিহ হাদিসে জানা যায়—রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে সাহাবিরা এটি আহার করেছিলেন। যদিও রাসুল (সা.) নিজে খাননি, তবুও নিষেধও করেননি। বরং তিনি বলেন, “এটি আমার এলাকার খাবার নয়, তাই আগ্রহ বোধ করি না। তবে তোমরা চাইলে খেতে পারো।” (সহিহ বুখারি ও মুসলিম) হানাফি মাজহাবে দব খাওয়াকে মাকরুহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তবে মালিকি, শাফেয়ি ও হাম্বলি মাজহাব অনুসারী অধিকাংশ আলেম একে হালাল হিসেবে গণ্য করেন। ফলে দব খাওয়া নিয়ে শরিয়াহ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে।

গুইসাপ বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার একটি বহুল পরিচিত প্রাণী, যা স্থল ও জল উভয় পরিবেশে বিচরণ করে। এটি বড় আকারের ও অনেকটা ভয়ংকর দেখায়। শরিয়াহ মতে, বিশেষ করে হানাফি মাজহাবে গুইসাপ খাওয়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এটি অপবিত্র, নাপাক এবং মানবিক রুচির পরিপন্থী প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। কোরআন ও হাদিসে সামুদ্রিক প্রাণীকে (যেমন মাছ) হালাল বলা হলেও, সরীসৃপ ও উভচর প্রাণীদের ক্ষেত্রে ভিন্ন বিধান রয়েছে।

হানাফি মাজহাবের বিখ্যাত কিতাবসমূহ—যেমন আল-হিদায়া, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, আল-মাবসুত, বাদায়েউস সানায়ে—সবখানেই সরীসৃপ ও উভচর প্রাণীদের খাওয়াকে নিষিদ্ধ বা অপছন্দনীয় বলা হয়েছে। অন্যদিকে মালিকি, শাফেয়ি ও হাম্বলি মাজহাব দব-কে হালাল মনে করলেও সান্ডা ও গুইসাপের মতো প্রাণীগুলোকে নাজায়েজ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

বাংলাদেশের ইসলামিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থানও বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদে সহিহ বুখারির হাদিস উল্লেখ করে বলা হয়েছে, যেহেতু রাসুল (সা.) দব খেতে নিষেধ করেননি, তাই এটি হারাম নয়। দারুল ইফতা বাংলাদেশের একাধিক ফতোয়ায়ও বলা হয়েছে, হানাফি মতে দব খাওয়া মাকরুহ, হারাম নয়। তবে অন্য মাজহাব অনুসরণকারী মুসলমানদের জন্য এটি হালাল।

সবশেষে বলা যায়, ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা এবং খাদ্য গ্রহণেও হালাল-হারাম বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি। একজন মুসলমানের জন্য উচিত, নিজের মাজহাবের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়গুলো জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া। সান্ডা ও গুইসাপের মতো প্রাণী যেহেতু অধিকাংশ মাজহাবে নাজায়েজ বা হারাম হিসেবে বিবেচিত, তাই এসব প্রাণী থেকে বিরত থাকাই উত্তম। আর দব—যেখানে শরিয়াহ মতে ভিন্ন মত রয়েছে—তা খেতে হলে মাজহাব অনুযায়ী সচেতনতা অবলম্বন করা জরুরি।

Tag :

এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

সান্ডা খাওয়া কি হালাল?

সান্ডা ও কফিলের ছেলে নিয়ে এতো হইচই কেন?

সর্বশেষ আপডেট ০১:১৮:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করলেই চোখে পড়ে, সান্ডা ফোঁস করছে, আর কফিলের ছেলে হাসছে। এক নতুন ট্রেন্ডে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। কিন্তু হঠাৎ কেন এই ‘সান্ডা’? আর ‘কফিলের ছেলে’ই বা কে?

বৃটানিকার তথ্য অনুযায়ী, ‘সান্ডা’ আসলে স্পাইনি টেইলড লিজার্ড বা কাঁটাযুক্ত লেজওয়ালা টিকটিকি। এর বৈজ্ঞানিক নাম ইউরোমাস্টিক্স। এটি অ্যাগামিডি গোত্রের অন্তর্গত, এর এক ডজনের বেশি প্রজাতি রয়েছে।

‘সান্ডা’ কোনো নির্দিষ্ট প্রাণীর নাম নয়। মরু অঞ্চলে বাস করা এই গোত্রের বেশ কয়েকটি প্রজাতিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। আরবি ভাষায় একে বলা হয় ‘দব’। মরুভূমিতে বসবাসকারী এই গোত্রের লিজার্ডদেরই সাধারণভাবে ‘সান্ডা’ বলা হয়।

এর দেহ টিকটিকির মতো, লেজ কাঁটায় ভরা। তাপমাত্রা অনুযায়ী এরা রঙ বদলাতে পারে। গরমে শরীর হালকা, ঠান্ডায় গাঢ়- এভাবেই বেঁচে থাকে মরুভূমিতে।

এদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল উত্তর আফ্রিকা থেকে শুরু করে ভারতের মরু অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। দিনের বেলা রোদ পোহায়, আর সন্ধ্যায় গর্তে আশ্রয় নেয়। খাদ্য তালিকায় রয়েছে গাছের পাতা, ফলমূল ও ছোট পোকামাকড়।

মরুর বেদুঈনরা অনেকেই এই সান্ডা ধরে খায়। কেউ কেউ তো সান্ডার বিরিয়ানিও রান্না করেন! বিষয়টি মজার হলেও বাস্তব। এইসব ঘটনাই রসিকতা ও কৌতুকে পরিণত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

সান্ডা শব্দটি এখন আর মরুভূমির প্রাণী নয়। এটি এক ধরনের প্রতীক, এক ধরনের অনলাইন হিউমারের কোরে পরিণত হয়েছে। এর পেছনে রয়েছে কিছু প্রবাসী বাংলাদেশির নির্মল হাস্যরস ও বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি।

মরুভূমির প্রাণীর প্রজাতি সান্ডা
মরুভূমির প্রাণীর প্রজাতি সান্ডা

অন্যদিকে ‘কফিল’ শব্দটি এসেছে আরবি ভাষা থেকে। মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়োগকর্তাকে বলা হয় ‘কফিল’। আর সেই কফিলের সন্তানেরাই আজ মিম ও রিলসের মাধ্যমে পরিচিত ‘কফিলের ছেলে’ নামে। তারা কেমন পোশাক পরে, কীভাবে ঘোরে- সবই যেন এখন একেকটা কৌতুকের খোরাক।

এই ট্রেন্ডের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে কিছু বাংলাদেশি ভ্লগার। তাদের মধ্যে একজন হলেন আবদুল মান্নান। তিনি সৌদি আরবের দাম্মামে থাকেন, পেশায় উট ও ছাগল চরান। ফাঁকে ফাঁকে তৈরি করেন ভিডিও, যেখানে দেখা যায় মরুভূমির জীবজগৎ- বিশেষ করে ‘সান্ডা’ নামক প্রাণীটি।

এই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ৬.৮ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ দেখে ফেলেছে। এমনকি সান্ডার এই ‘ফঁস ফঁস’ শব্দ এখন মিমের অংশ হয়ে গেছে।

‘সান্ডা’ এখন শুধু একটি প্রাণী নয়, এটি একটি কালচারাল ফেনোমেনা। এটি দেখিয়ে দেয়, মানুষ কত সহজে জীবনের ছোট ছোট বিষয়কে নিয়ে হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করতে পারে।

সান্ডা খাওয়া কি হালাল?

সান্ডা, দব ও গুইসাপ—এই তিনটি প্রাণী দেখতে কাছাকাছি হলেও ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী এগুলোর খাদ্য হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা ভিন্ন। দক্ষিণ এশিয়ায় প্রচলিত প্রাণী সান্ডা এক ধরনের উভচর সরীসৃপ, যা দেখতে অনেকটা গুইসাপের মতো। ইসলামী শরিয়াহ—বিশেষ করে হানাফি মাজহাব অনুসারে—সান্ডা খাওয়া স্পষ্টভাবে হারাম। আরব অঞ্চলে সাধারণত এ প্রাণী দেখা যায় না এবং সেখানকার মুসলমানরা একে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করেন না।

অন্যদিকে দব মূলত আরবের মরু অঞ্চলের প্রাণী, যা সম্পর্কে সহিহ হাদিসে জানা যায়—রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সামনে সাহাবিরা এটি আহার করেছিলেন। যদিও রাসুল (সা.) নিজে খাননি, তবুও নিষেধও করেননি। বরং তিনি বলেন, “এটি আমার এলাকার খাবার নয়, তাই আগ্রহ বোধ করি না। তবে তোমরা চাইলে খেতে পারো।” (সহিহ বুখারি ও মুসলিম) হানাফি মাজহাবে দব খাওয়াকে মাকরুহ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তবে মালিকি, শাফেয়ি ও হাম্বলি মাজহাব অনুসারী অধিকাংশ আলেম একে হালাল হিসেবে গণ্য করেন। ফলে দব খাওয়া নিয়ে শরিয়াহ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে।

গুইসাপ বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার একটি বহুল পরিচিত প্রাণী, যা স্থল ও জল উভয় পরিবেশে বিচরণ করে। এটি বড় আকারের ও অনেকটা ভয়ংকর দেখায়। শরিয়াহ মতে, বিশেষ করে হানাফি মাজহাবে গুইসাপ খাওয়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এটি অপবিত্র, নাপাক এবং মানবিক রুচির পরিপন্থী প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। কোরআন ও হাদিসে সামুদ্রিক প্রাণীকে (যেমন মাছ) হালাল বলা হলেও, সরীসৃপ ও উভচর প্রাণীদের ক্ষেত্রে ভিন্ন বিধান রয়েছে।

হানাফি মাজহাবের বিখ্যাত কিতাবসমূহ—যেমন আল-হিদায়া, ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া, আল-মাবসুত, বাদায়েউস সানায়ে—সবখানেই সরীসৃপ ও উভচর প্রাণীদের খাওয়াকে নিষিদ্ধ বা অপছন্দনীয় বলা হয়েছে। অন্যদিকে মালিকি, শাফেয়ি ও হাম্বলি মাজহাব দব-কে হালাল মনে করলেও সান্ডা ও গুইসাপের মতো প্রাণীগুলোকে নাজায়েজ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

বাংলাদেশের ইসলামিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থানও বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদে সহিহ বুখারির হাদিস উল্লেখ করে বলা হয়েছে, যেহেতু রাসুল (সা.) দব খেতে নিষেধ করেননি, তাই এটি হারাম নয়। দারুল ইফতা বাংলাদেশের একাধিক ফতোয়ায়ও বলা হয়েছে, হানাফি মতে দব খাওয়া মাকরুহ, হারাম নয়। তবে অন্য মাজহাব অনুসরণকারী মুসলমানদের জন্য এটি হালাল।

সবশেষে বলা যায়, ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা এবং খাদ্য গ্রহণেও হালাল-হারাম বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি। একজন মুসলমানের জন্য উচিত, নিজের মাজহাবের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়গুলো জেনে-বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া। সান্ডা ও গুইসাপের মতো প্রাণী যেহেতু অধিকাংশ মাজহাবে নাজায়েজ বা হারাম হিসেবে বিবেচিত, তাই এসব প্রাণী থেকে বিরত থাকাই উত্তম। আর দব—যেখানে শরিয়াহ মতে ভিন্ন মত রয়েছে—তা খেতে হলে মাজহাব অনুযায়ী সচেতনতা অবলম্বন করা জরুরি।