ঢাকা ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজাকারের ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপ, লক্ষ্যভেদে মিলছে পুরস্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাবি
  • সর্বশেষ আপডেট ০৮:৪১:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • / 36

রাজাকারের ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপ, লক্ষ্যভেদে মিলছে পুরস্কার

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করেছে একদল শিক্ষার্থী। এ কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষও অংশ নেন। লক্ষ্যভেদ করতে পারলে অংশগ্রহণকারীদের পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ার সামনে অবস্থিত রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভ এলাকায় এ কর্মসূচি শুরু হয়। জুতা নিক্ষেপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা নির্দিষ্ট লক্ষ্যভেদ করতে পারলে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে দেখা যায়।

ঘটনাস্থলে দেখা যায়, ঘৃণাস্তম্ভের পেছনের দেয়ালে একাধিক ছবি টাঙানো হয়েছে। সেখানে যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুজাহিদের ছবি, চৌধুরী মঈনুদ্দীন, অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনাকারী খাদিম হোসেন রাজা, পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে গোলাম আজমের বৈঠকের ছবি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আটক রাজাকার বাহিনীর বিভিন্ন চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

কর্মসূচির আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত চৌধুরী বলেন, ১৯৭১ সালে যারা দেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতেই এই আয়োজন। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের বর্বরতার ইতিহাস যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভুলে না যায়, সে জন্যই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে ফেসবুকভিত্তিক গ্রুপ ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ’-এ কর্মসূচি নিয়ে একটি আহ্বান জানানো হয়। সেখানে আলবদর, আলশামস, রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশের কথা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পোস্টে অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিশেষ উপহারের কথাও উল্লেখ ছিল।

জুতা নিক্ষেপের পাশেই ‘নিঃশব্দ ঘৃণা’ শিরোনামে একটি বোর্ড স্থাপন করা হয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা ঘৃণাসূচক নানা বক্তব্য লিখে তাদের অবস্থান জানান। বোর্ডে রাজাকার ও গণহত্যার পক্ষে থাকা শক্তির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভের প্রকাশ দেখা যায়।

কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা প্রবীণ সুফি হাশিম বলেন, যারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের প্রতি তিনি গভীর ঘৃণা প্রকাশ করেন। তার মতে, এমন নৃশংসতা মানবতার পরিপন্থী।

উল্লেখ্য, রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভটি ২০০৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে ছাত্র ইউনিয়নের কলা ভবন শাখার তৎকালীন সভাপতি সাদিকুর রহমান ও উর্দু ও ফারসি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু তৈয়ব হাবিলদারের উদ্যোগে নির্মিত হয়। পরদিন ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের কয়েকজন সেক্টর কমান্ডারের উপস্থিতিতে স্তম্ভটির উদ্বোধন করা হয়। ২০০৮ সালে স্তম্ভটি ভেঙে ফেলা হলেও পরে তা পুনর্নির্মাণ করা হয়।

এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

রাজাকারের ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপ, লক্ষ্যভেদে মিলছে পুরস্কার

সর্বশেষ আপডেট ০৮:৪১:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করেছে একদল শিক্ষার্থী। এ কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষও অংশ নেন। লক্ষ্যভেদ করতে পারলে অংশগ্রহণকারীদের পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ার সামনে অবস্থিত রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভ এলাকায় এ কর্মসূচি শুরু হয়। জুতা নিক্ষেপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা নির্দিষ্ট লক্ষ্যভেদ করতে পারলে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে দেখা যায়।

ঘটনাস্থলে দেখা যায়, ঘৃণাস্তম্ভের পেছনের দেয়ালে একাধিক ছবি টাঙানো হয়েছে। সেখানে যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুজাহিদের ছবি, চৌধুরী মঈনুদ্দীন, অপারেশন সার্চলাইটের পরিকল্পনাকারী খাদিম হোসেন রাজা, পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে গোলাম আজমের বৈঠকের ছবি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে আটক রাজাকার বাহিনীর বিভিন্ন চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

কর্মসূচির আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত চৌধুরী বলেন, ১৯৭১ সালে যারা দেশের বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতেই এই আয়োজন। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের বর্বরতার ইতিহাস যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভুলে না যায়, সে জন্যই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে ফেসবুকভিত্তিক গ্রুপ ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ’-এ কর্মসূচি নিয়ে একটি আহ্বান জানানো হয়। সেখানে আলবদর, আলশামস, রাজাকার ও পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশের কথা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের ঘৃণাস্তম্ভে জুতা নিক্ষেপে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পোস্টে অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিশেষ উপহারের কথাও উল্লেখ ছিল।

জুতা নিক্ষেপের পাশেই ‘নিঃশব্দ ঘৃণা’ শিরোনামে একটি বোর্ড স্থাপন করা হয়। সেখানে শিক্ষার্থীরা ঘৃণাসূচক নানা বক্তব্য লিখে তাদের অবস্থান জানান। বোর্ডে রাজাকার ও গণহত্যার পক্ষে থাকা শক্তির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভের প্রকাশ দেখা যায়।

কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা প্রবীণ সুফি হাশিম বলেন, যারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তাদের প্রতি তিনি গভীর ঘৃণা প্রকাশ করেন। তার মতে, এমন নৃশংসতা মানবতার পরিপন্থী।

উল্লেখ্য, রাজাকার ঘৃণাস্তম্ভটি ২০০৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাতে ছাত্র ইউনিয়নের কলা ভবন শাখার তৎকালীন সভাপতি সাদিকুর রহমান ও উর্দু ও ফারসি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু তৈয়ব হাবিলদারের উদ্যোগে নির্মিত হয়। পরদিন ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের কয়েকজন সেক্টর কমান্ডারের উপস্থিতিতে স্তম্ভটির উদ্বোধন করা হয়। ২০০৮ সালে স্তম্ভটি ভেঙে ফেলা হলেও পরে তা পুনর্নির্মাণ করা হয়।