নারীতে মগ্ন জনতা ব্যাংকের ডি এম ডি মোর্তজা!
- সময় ০৩:৪৯:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪
- / 6269
দেশের রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংকগুলোর মধ্যে অন্যতম জনতা ব্যাংক লিমিটেডের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) গোলাম মোর্তজার মন ব্যাংকিং সেক্টরে তেমন না থাকলেও তিনি মজে আছেন নারীতে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে (ম) অধ্যাক্ষরের একজন নারীর সঙ্গে অনৈতিক শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেন গোলাম মোর্তজা। এমন অভিযোগের সুনিদিষ্ট তথ্য প্রমাণ বাংলা অ্যাফেয়ার্সের হাতে এসেছে।
ভুক্তভোগী নারী ইতিমধ্যেই, নৈতিক স্থলনের দায়ে অভিযুক্ত জনতা ব্যাংকের ডিএমডি গোলম মোর্তজার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শুরু করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর, চেয়ারম্যান জনতা ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরেই অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ভুক্তভোগী কোনো সুবিচার পাননি।
ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করে বাংলা অ্যাফেয়ার্সকে বলেন , আমি বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সে সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মোর্তজার সাথে পরিচয়। সময় অসময় নক দিতেন, নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিতেন। নারীর মন ভুলানো সব কথা তিনি আমাকে বলতেন। ধীরে ধীরে আমাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। কখন যে তার পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে ফেলি বুঝতে পারিনি।
গোলাম মোর্তজা কৌশলে আমাকে দিয়ে ২ টা সিম কিনে দেন। সিম নেবার পর থেকে আমাদের কথা বলা এবং ভিডিও কলের পরিমাণ অনেকখানি বেড়ে যায়।
উনি আমাকে প্রায়ই সময়ে ভিডিও কলে পুরুষের বিশেষ অঙ্গের ছবি দেখাত সেটি তার অফিস ও বাসায় থাকলেও (হোয়াটসঅ্যাপে)। প্রায়ই বলতো আমার একটা বিশেষ ছবি পাঠাতে। আর সবসময় বলতো আমি তোমার স্বামী তুমি আমার স্ত্রী। ভালবাসার মানুষের ছবি কাছে রাখতে হয়, এই সব বলে আমার কাছ থেকে একটি ছবি সংগ্রহ করে, এর কিছুদিন পর জানতে পারি মো:গোলাম মর্তুজা বিবাহিত এবং তার দুটি সন্তান আছে এটি জানার পর তার কাছ থেকে আমি সরে আসার চেষ্টা করি, কিন্তু সে আমাকে আমার ছবি প্রসঙ্গ তুলে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে। আরো বলেন, তোমাকে আমি বিয়ে করবো মুসলিমদের চারটা বিয়ে সুন্নত তার এই কথায় আমি কিছুটা স্বাভাবিক হই।
ভুক্তভোগী নারী আরো বলেন, বেশ কিছুদিন পরে তিনি বলেন, আমার পরিবার এবং তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাব কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকত দেখে চলে আসব। আমাকে এই বলে ইউ এস বাংলা এয়ারলাইন্স এর বিমানের টিকেটও পাঠিয়ে দেয় (হোয়াটসঅ্যাপে)।
ঢাকা থেকে কক্সবাজার যার টিকেটের তারিখ ৩০/১০/২০২২ সময় ১১:১৫ মিনিট ফ্লাইট নং BS147। আসার সময় কক্সবাজার টু ঢাকা তারিখ ১/১১/২০২২ ফ্লাইট নং Bs144 সময় ১১ঃ১৫ মিনিট। হোটেল থ্রি স্টার, টিকেটে আমার নাম ছিলো না। ছিল মোর্তজার স্ত্রী লুতফুর নাহার নাম। আমি জিজ্ঞাসা করি এই নামে টিকিট কেন? উনি বলেন যেহেতু আলাদা আলাদা রুম নিবো তাই এই নাম ব্যবহার করেছি তোমার সেফটির জন্য। কোন সমস্যা নেই। ঢাকা এয়ারপোর্টে গিয়ে দেখি উনার পরিবারের কোনো সদস্য আসেনি। এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে উনি বলেন, যাব আর আসবো আর রুম নিবো দুইটা তোমার তো সমস্যা হওয়ার কথা না। কক্সবাজারে হোটেলে গিয়ে বলেন রুম নেই একটাই রুম নিতে হবে এই বলে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে আমার সাথে জোরপূর্বক শারিরীক সম্পর্ক গড়ে তুলে। কিছু দিন পরে আবারও বিয়ের আশ্বাস দিয়ে ৮/৬/২০২৩ নরসিংদীর পাঁচদোনার একটি রিসোর্টে একটি রুম নেন, রুম নাম্বার ৩০৮। তার মনে ছিলো অন্যকিছু। আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভনে দীর্ঘ তিন বছর ধরে শারীরিক সম্পর্ক করে এসেছেন। এক পর্যায়ে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরলে বিষয়টি তাকে জানাই এবং গোলাম মোর্তজা তখন উচ্চস্বরে বাচ্চা নষ্ট করার ওষুধ খাওয়াই দেয়।
আমি এই ঘটনাটি বোঝার পর তার সাথে যোগাযোগ করার অনেক চেষ্টা করি এমন কি গোলাম মোর্তজা সাবেক কর্মস্থল রুপালী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক মতিঝিল অফিসে আগে গিয়েছি কোন সমস্যা হয়নি, যখনই সমস্যা সৃষ্টি হয় আর আমাকে মতিঝিল অফিসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কিছুদিন পরে আমি জনতা ব্যাংকের এমডি স্যারকে কল দিয়ে ব্যাপারটি জানাই তিনি বলেন আমি তো এ ব্যাপারে কিছুই জানিনা এটাতো মুর্তজার সমস্যা তাকে বলো সমস্যা সমাধান করতে এই বলে লাইন কেটে দেয়। এর কিছুদিন পর গোলাম মোর্তোজার বন্ধু তারেক খান আমাকে কল দেয় মুর্তজার সাথে দেখা করানোর কথা বলে আমাকে ঢাকাতে দুই বার ডেকে নিয়ে যায়, প্রথম বার আমি বিকাল চারটাই গুলশান দুইয়ে একটি রেস্টুরেন্টে দুই ঘন্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করি মোর্তোজা দেখা করেনি শুধু তারেক ছিলো।
দ্বিতীয়বার বুধবার ৪/৯/২০২৩ তারেক আমাকে ধানমন্ডির একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে নিয়ে যায় তারেকের সঙ্গে তখন সেখানে মোর্তুজাও ছিল। মোর্তুজাকে আমি জিজ্ঞেস করি এমনটা আমার সঙ্গে কেন করেছেন?
মোর্তুজা তারেকের দিকে তাকিয়ে বলে এই মেয়ে একটা মেন্টাল তার কথা শুনে কোন লাভ নেই এই বলে তিনি রেস্টুরেন্ট থেকে উঠে চলে যায়। আমি তারেকের সামনে কান্নায় ভেঙে পরি তখন তারেক আমাকে বলে তোর কথা কেউ শুনবে না, ছেলেরা এসব করতে পারে, মামলা হামলা করলেও তুই কিছুই করতে পারবি না, এই নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে গুলশানে মেরে তোর লাশ গুম করে ফেলব বলে আমাকে হুমকি দিয় তারেক খান। এর কিছুদিন পর আমার পরিচিতজনকে দিয়ে মো:গোলাম মর্তুজার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তারেক খান আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে আমার মা-বাবা কে নিয়ে অনেক বাজে বাজে কথা বলেন এবং আরো বলেন
তোর মত মেয়েকে কিভাবে জন্ম দিয়েছে তোর মা বাবা তোকে দিয়ে ব্যবসা করায়। তারেক আরো বলে মোর্তজার স্ত্রী লুৎফুন নাহার আমার বাবা ও ভাইয়ের নামে মামলা করেছে তোরা টাকা পয়সার লোভে এমন করছিস । তোর মত বেশ্যা** মা*কে আমি হলে পেটে পারা দিয়ে মেরে ফেলতাম।
আমাকে এই বিষয়ে একজন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা কল দিয়েও হুমকি দেয় আমি যাতে এই বিষয়টা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করি।
উপায়ান্তর না পেয়ে আমি গোলাম মোর্তজার বউয়ের সাথে যোগাযোগ করি। ফোনে মুর্তজার স্ত্রী লুৎফুন নাহারকে আমাদের সম্পর্কের বিষয় জানাই। তিনি সবকিছু শুনে আমাকে বলেন, আমাদের স্ট্যাটাস সম্পর্কে তোমার ধারণা আছে? তুমি যা করছো টাকার জন্য করছো, তো কত টাকা লাগবে তোমার, যা চাও তাই দেব, পুরুষরা এসব করে এটা কোন ব্যাপার না। এমনকি আমার পরিবার নিয়ে অনেক আজেবাজে কথা বলেন ডিএমডির বৈধ স্ত্রী লুৎফুন নাহার।
ভুক্তভোগী নারী আরো অভিযোগ করে বলেন, আমি অনেক আগেই প্রশাসনের দারস্ত হতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল প্রশাসন থেকেই। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে তাই সাহস দেখাতে পারিনি। গোলাম মুর্তজা আরো অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে। তারা হয়তো সমাজ লোক লজ্জার ভয়ে কিছুই বলছে না। কাঁদতে কাঁদতে কথা শেষ করেন মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত মেয়ে ভুক্তভোগী। এভাবেই নীরবে নিভৃতে কাঁদে ভুক্তভোগী নারী আর ব্যাংকিং সেক্টরে মন না দিয়ে মোর্তজার ভোগের শিকার হতেই থাকে নারীরা।
এই বিষয়ে গোলাম মোর্তজার কাছে জানতে চাইলে, প্রথমে তিনি সব কিছু অস্বীকার বলেন, এ আই প্রযুক্তির মাধ্যমে এসব ছবি বানানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কেন তিনি আইনি পদক্ষেপ নেননি, তার সদুত্তর দিতে পারেননি। তার এ দাবির প্রেক্ষিতে বাংলা অ্যাফের্য়াস প্রযুক্তিবিদ মাধ্যমে প্রমাণ পায় যে ছবিগুলো সত্য।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত চলমান রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ভুক্তভোগী নারীর কাছে আরো কিছু প্রমাণ চেয়েছে। উনি সেগুলো জমা দিলেই তদন্ত শেষে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র।
উল্লেখ্য, গোলাম মোর্তজা ১৯৯৮ সালে রূপালী ব্যাংকে একজন সিনিয়র অফিসার হিসাবে তার ব্যাংকিং ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর রূপালী ব্যাংকের ক্রেডিট বিভাগে মহাব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে জনতা ব্যাংক মতিঝিল প্রধান কার্যালয় ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) হিসেবে কর্মরত আছেন।