পলাশীতে ‘আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ’ উদ্বোধন

- সর্বশেষ আপডেট ০৭:২১:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫
- / 29
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নির্যাতনে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের স্মরণে রাজধানীর পলাশী মোড়ে আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ আয়োজিত উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এটি উদ্বোধন করেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব, তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম সদস্যসচিব আকরাম হুসাইন, বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল হাসিব চৌধুরী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, আবরার ফাহাদের ভাই আবরার ফাইয়াজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ভিপি সাদিক কায়েম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদস্যসচিব জাহিদ আহসান।
উদ্বোধনের পর আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বলেন, “আট স্তম্ভ তৈরি করায় আমি কৃতজ্ঞতা জানাই। আবরার ফাহাদ আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। আমি আহবান জানাই—জুলাইয়ে আহত ও নিহতদের তালিকা করা হচ্ছে। পাশাপাশি অতীতে অত্যাচারে র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে শহীদদের তালিকা দ্রুত তৈরি করা হোক।”
২০২০ সালের ৭ অক্টোবর আবরার ফাহাদের প্রথম শাহাদতবার্ষিকীতে আখতার হোসেনের উদ্যোগে আট স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়েছিল, তবে তা ভেঙে দেওয়া হয়। আট স্তম্ভ নির্মাণের নেতৃত্ব দেওয়ায় আখতার হোসেন ছাত্রলীগের হামলা ও নির্যাতনের শিকার হন। পাঁচ আগস্টের পরে এটি নতুনভাবে তৈরি করা হয়েছে।
আটটি স্তম্ভের নাম—সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, গণপ্রতিরক্ষা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা, দেশীয় শিল্প-কৃষি ও নদী-বন-বন্দর রক্ষা, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা এবং মানবিক মর্যাদা। পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
অনুষ্ঠানে আসিফ মাহমুদ বলেন, “২০১৯ সালে আবরার ফাহাদ শহীদ হওয়া দিন একটি বিরূপ পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। আমরা তখন আন্দোলনের প্রস্তুতিতে ছিলাম না। অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিল—আবরার ফাহাদ কোনো শিবিরের সদস্য হলে মারা যাওয়া জায়েজ হবে কি না। সেসময় বুয়েট শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ ও সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের জন্য দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিল। জুলাইয়ের প্রত্যেক শহীদ আবরার ফাহাদের লড়াই থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছে।”
মাহফুজ আলম বলেন, “তরুণ প্রজন্ম আমাদের বড় শক্তির উৎস। আবরার ফাহাদ ও জুলাইয়ের শহীদদের স্মরণে আধিপত্যবাদ ও উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে আমাদের নিজেদের প্রস্তুতি তৈরি করতে হবে। বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে কাজ করতে হবে।”
আখতার হোসেন বলেন, “আবরার ফাহাদ বাংলাদেশের পক্ষের সকল শক্তির ঐক্যের প্রতীক। তার হত্যাকাণ্ডের পর ফ্যাসিবাদবিরোধী সব দল আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিল। আবরার ফাহাদ সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে জীবন দিয়েছেন। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের নয়; ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির একত্রিত হওয়ার মূল মন্ত্রের প্রতীক।”