ঢাকা ০৬:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশি-ভারতীয় আটক জেলেদের হস্তান্তর ৫ জানুয়া‌রি

মাসুদ রানা, মোংলা (বাগেরহাট)
  • সময় ০৬:৩৬:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারি ২০২৫
  • / 52

ডিক্যাব লাউঞ্জে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশে আটক ৯৫ জন ভারতীয় জেলে এবং ভারতে আটক ৯০ জন বাংলাদেশি জেলের বিনিময় প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ৫ জানুয়ারি বঙ্গোপসাগরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় এই বিনিময় হবে।

বৃহস্প‌তিবার (২ জানুয়া‌রি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ডিক্যাব) লাউঞ্জ পরিদর্শনে এসে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌ‌হিদ হোসেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগামী ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে আটক ৯৫ জন ভারতীয় জেলে এবং ভারতে আটক ৯০ জন বাংলাদেশি জেলের বিনিময় হবে।

জানা গেছে, ৭৮ জন বাংলাদেশি এমভি মেঘনা ও এমভি লায়লা নামে দুটি ফিশিং ট্রলার নিয়ে ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ে এবং ৯ ডিসেম্বর তাদের আটক করে ওড়িশার পারা দ্বীপে রাখা হয়েছে। অন্য ১২ জন জেলেকে সেপ্টেম্বরে আটক করা হয়, যখন তাদের ট্রলারটি ভারতীয় জলসীমায় ডুবে যায়। তাদের কলকাতার কাছে কাকদ্বীপে রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে, ভারতীয়দের ছয়টি ট্রলার সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে বাংলাদেশি জলসীমায় ঢুকে পড়ে এবং তখন তাদের পটুয়াখালী ও বাগেরহাটে আটক করে রাখা হয়। জেলেদের আন্তর্জাতিক সীমানা আইন লঙ্ঘন সংক্রান্ত যে জটিলতা ছিল সেটি মিটিয়ে ফেলা হয়েছে।

এ সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ডিক্যাব লাউঞ্জ প‌রিদর্শনে ছিলেন পররাষ্ট্রস‌চিব মো. জসীম উ‌দ্দিন।

ভারতীয় জেলেদের পুশব্যাকের প্রস্তুতি
ভারতীয় জেলেদের পুশব্যাকের প্রস্তুতি

বাংলা অ্যাফেয়ার্সের বাগেরহাটের মোংলার নিজস্ব প্রতিবেদক মাসুদ রানা জানিয়েছে, এক মাস ১৬ দিন কারাভোগ শেষে নিজ দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন ৬৪ ভারতীয় জেলে। গত বছরের ১৭ অক্টোবর জলসীমা লঙ্ঘনের দায়ে তাদেরকে আটক করেছিলেন নৌ বাহিনী ও কোস্ট গার্ড। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে এ সকল জেলেদের ভারতের পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিণ-চব্বিশ পরগোনার কাকদ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার জন্য প্রস্তুতি চলছে । এ জেলেরা ভারতের  কাকদ্বীপের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা বলে জানায় মোংলা থানার ওসি মোঃ আনিসুর রহমান।

তিনি আরও জানান, বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারের দায়ে গত ১৭অক্টোবর ৪টি ট্রলারসহ ৬৪ভারতীয় জেলেকে আটক করেছিলেন নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড। মোংলা বন্দরের অদূরে ফেয়ারওয়ে বয়া সংলগ্ন সমুদ্র এলাকা থেকে ওই ভারতীয় জেলেদের আটকের পর পুলিশে দেয়া হয়। এরপর এ ঘটনায় থানা মামলা দায়েরের পর তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছিলো।

টানা এক মাস ১৬দিন হাজত খেটে বৃহস্পতিবার দুপুরে (২জানুয়ারী) জেল থেকে ছাড়া পান ভারতীয় এ জেলেরা। পরে বাগেরহাট থেকে পুলিশ তাদেরকে মোংলায় নিয়ে আসেন। মোংলার ফেরিঘাটে থাকা ভারতীয় জেলেদের ট্রলারসহ অন্যান্য মালামাল বুঝিয়ে দেয়া হয় তাদেরকে। আর কার্যক্রমের সাথে রয়েছেন কোস্ট গার্ড। এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নতুন তারিখ ঘোষণার পর ভারতীয় জেলেদের আবারও জেলেদের কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

এ সকল জেলেদের নিতে আসা স্বজন অভিজিৎ বিশ্বাস ও সুকুমার গাইন বলেন, দিক ভুল করে ভারতীয় জেলেরা এদেশের জলসীমা চলে আসলে তাদেরকে আটক করে জেলে দেয়া হয়েছিলো। পরে ভারত-বাংলাদেশের সমঝোতায় মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ায় ১মাস ১৬দিন পর তারা ছাড়া পেয়েছেন। তাদেরকে এখন আমরা কাকদ্বীপে নিয়ে যাবো। আর এদেশের বর্তমান সরকারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই সমঝোতার মাধ্যমে আমাদের জেলেদেরকে জেল থেকে ছেড়ে দেয়ার জন্য।

মোংলা থানার এসআই হাদিউজ্জামান হাদী বলেন, ভারতীয় জেলেদের আটকের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছিলো। বৃহস্পতিবার তারা জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাদেরকে আমরা তাদের মালামাল বুঝিয়ে দিয়েছি , এ কার্যক্রমের সাথে কোস্ট গার্ডও ছিল। এখন কোস্ট গার্ডের মাধ্যমে  তারা তাদের দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যাবেন।

শেয়ার করুন

বাংলাদেশি-ভারতীয় আটক জেলেদের হস্তান্তর ৫ জানুয়া‌রি

সময় ০৬:৩৬:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারি ২০২৫

বাংলাদেশে আটক ৯৫ জন ভারতীয় জেলে এবং ভারতে আটক ৯০ জন বাংলাদেশি জেলের বিনিময় প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ৫ জানুয়ারি বঙ্গোপসাগরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় এই বিনিময় হবে।

বৃহস্প‌তিবার (২ জানুয়া‌রি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ডিক্যাব) লাউঞ্জ পরিদর্শনে এসে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌ‌হিদ হোসেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগামী ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে আটক ৯৫ জন ভারতীয় জেলে এবং ভারতে আটক ৯০ জন বাংলাদেশি জেলের বিনিময় হবে।

জানা গেছে, ৭৮ জন বাংলাদেশি এমভি মেঘনা ও এমভি লায়লা নামে দুটি ফিশিং ট্রলার নিয়ে ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ে এবং ৯ ডিসেম্বর তাদের আটক করে ওড়িশার পারা দ্বীপে রাখা হয়েছে। অন্য ১২ জন জেলেকে সেপ্টেম্বরে আটক করা হয়, যখন তাদের ট্রলারটি ভারতীয় জলসীমায় ডুবে যায়। তাদের কলকাতার কাছে কাকদ্বীপে রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে, ভারতীয়দের ছয়টি ট্রলার সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে বাংলাদেশি জলসীমায় ঢুকে পড়ে এবং তখন তাদের পটুয়াখালী ও বাগেরহাটে আটক করে রাখা হয়। জেলেদের আন্তর্জাতিক সীমানা আইন লঙ্ঘন সংক্রান্ত যে জটিলতা ছিল সেটি মিটিয়ে ফেলা হয়েছে।

এ সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ডিক্যাব লাউঞ্জ প‌রিদর্শনে ছিলেন পররাষ্ট্রস‌চিব মো. জসীম উ‌দ্দিন।

ভারতীয় জেলেদের পুশব্যাকের প্রস্তুতি
ভারতীয় জেলেদের পুশব্যাকের প্রস্তুতি

বাংলা অ্যাফেয়ার্সের বাগেরহাটের মোংলার নিজস্ব প্রতিবেদক মাসুদ রানা জানিয়েছে, এক মাস ১৬ দিন কারাভোগ শেষে নিজ দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন ৬৪ ভারতীয় জেলে। গত বছরের ১৭ অক্টোবর জলসীমা লঙ্ঘনের দায়ে তাদেরকে আটক করেছিলেন নৌ বাহিনী ও কোস্ট গার্ড। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে এ সকল জেলেদের ভারতের পশ্চিম বঙ্গের দক্ষিণ-চব্বিশ পরগোনার কাকদ্বীপের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার জন্য প্রস্তুতি চলছে । এ জেলেরা ভারতের  কাকদ্বীপের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা বলে জানায় মোংলা থানার ওসি মোঃ আনিসুর রহমান।

তিনি আরও জানান, বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারের দায়ে গত ১৭অক্টোবর ৪টি ট্রলারসহ ৬৪ভারতীয় জেলেকে আটক করেছিলেন নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড। মোংলা বন্দরের অদূরে ফেয়ারওয়ে বয়া সংলগ্ন সমুদ্র এলাকা থেকে ওই ভারতীয় জেলেদের আটকের পর পুলিশে দেয়া হয়। এরপর এ ঘটনায় থানা মামলা দায়েরের পর তাদেরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছিলো।

টানা এক মাস ১৬দিন হাজত খেটে বৃহস্পতিবার দুপুরে (২জানুয়ারী) জেল থেকে ছাড়া পান ভারতীয় এ জেলেরা। পরে বাগেরহাট থেকে পুলিশ তাদেরকে মোংলায় নিয়ে আসেন। মোংলার ফেরিঘাটে থাকা ভারতীয় জেলেদের ট্রলারসহ অন্যান্য মালামাল বুঝিয়ে দেয়া হয় তাদেরকে। আর কার্যক্রমের সাথে রয়েছেন কোস্ট গার্ড। এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নতুন তারিখ ঘোষণার পর ভারতীয় জেলেদের আবারও জেলেদের কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

এ সকল জেলেদের নিতে আসা স্বজন অভিজিৎ বিশ্বাস ও সুকুমার গাইন বলেন, দিক ভুল করে ভারতীয় জেলেরা এদেশের জলসীমা চলে আসলে তাদেরকে আটক করে জেলে দেয়া হয়েছিলো। পরে ভারত-বাংলাদেশের সমঝোতায় মামলা প্রত্যাহার করে নেয়ায় ১মাস ১৬দিন পর তারা ছাড়া পেয়েছেন। তাদেরকে এখন আমরা কাকদ্বীপে নিয়ে যাবো। আর এদেশের বর্তমান সরকারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই সমঝোতার মাধ্যমে আমাদের জেলেদেরকে জেল থেকে ছেড়ে দেয়ার জন্য।

মোংলা থানার এসআই হাদিউজ্জামান হাদী বলেন, ভারতীয় জেলেদের আটকের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছিলো। বৃহস্পতিবার তারা জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাদেরকে আমরা তাদের মালামাল বুঝিয়ে দিয়েছি , এ কার্যক্রমের সাথে কোস্ট গার্ডও ছিল। এখন কোস্ট গার্ডের মাধ্যমে  তারা তাদের দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যাবেন।