০৯:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পর্তুগালের শত বছরের ঐতিহ্যর নাম “নাতা”

হাফিজ আল আসাদ, পর্তুগাল
  • সময় ০৪:৫৪:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / 35

পর্তুগালের শত বছরের ঐতিহ্যর নাম "নাতা"

প্রতিটি দেশ বা শহরের রয়েছে নিজস্ব কিছু বিশেষ স্থান, মানুষ, খাবার বা ইতিহাস ঐতিহ্যের জন্য সেই শহর বা দেশ বিশ্বের সুপরিচিত হয়। পর্তুগালও ঠিক তাই হাজার বছরের ইতিহাস বহন করা এই পুরনো দেশে রয়েছে ঐতিহ্যের ছড়াছড়ি। পর্তুগালে এমন একটি শত বছরের মিষ্টিজাতীয় খাবার হয়েছে যার ঐতিহ্যে বিশ্বের সুপরিচিত।

পাস্তেল ডি নাতার (Pastel de Nata) একটি জনপ্রিয় পর্তুগীজ ডেজার্ট। এটি মূলত একটি ক্ষুদ্র সৃতো কাস্টার্ড টার্ট যা মিষ্টি এবং ক্রিস্পি খোলের মধ্যে একটি ক্রিমি কাস্টার্ড ভরপুর থাকে। এই ডেজার্টটি পর্তুগালের একাধিক অঞ্চলে তৈরি হয়, তবে সবচেয়ে বিখ্যাত স্থান হলো পর্তুগালের লিসবনের ‘বেলেম’ অঞ্চলে।

“নাতা” (Nata) শব্দটি সাধারণত পর্তুগীজ ভাষায় ব্যবহৃত হয় এবং এর অর্থ হলো “ক্রিম” বা “কাস্টার্ড ক্রিম”। এটি পাস্তেল ডি নাতার (Pastel de Nata) ডেজার্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যেখানে কাস্টার্ড ক্রিম একটি মিষ্টি এবং সামান্য মশলাদার পদার্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বেকড পাফ প্যাস্ট্রি শেলের মধ্যে রাখা হয়।

পর্তুগালের বেলেম শহরে, জেরোনিমোস মোনাস্ট্রি (Jerónimos Monastery) থেকে। ১৮শ শতাব্দীতে, এই মঠের নানীরা অতিরিক্ত ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করতে পারতেন, যেহেতু মঠে দুধ ও ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করে কাপড় সাটানো হতো। এর ফলে, ডিমের কুসুমগুলি অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে এবং তারা সেগুলি কাস্টার্ড ক্রিম তৈরি করতে ব্যবহার শুরু করেন।

পর্তুগালের শত বছরের ঐতিহ্যর নাম "নাতা"
পর্তুগালের শত বছরের ঐতিহ্যর নাম “নাতা”

যেহেতু মঠের আর্থিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল, ১৮২০ সালের পর, মঠটি বন্ধ হয়ে যায় এবং এই কাস্টার্ড টার্টের রেসিপিটি স্থানীয় একটি বেকারি, পাস্তেলিরা ডে বেলেম (Pastéis de Belém) নামে পরিচিত বেকারি, নিজেদের ব্যবসার জন্য গ্রহণ করে এবং সেখানে এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এটি মূলত দুধ, ডিম, চিনি এবং ময়দা দিয়ে তৈরি করা হয়, যাতে ক্রিমি এবং মিষ্টি স্বাদ তৈরি হয়।

পাস্তেল ডি নাতা এই মিষ্টান্নটি পর্তুগালের ইতিহাসের একটি অংশ এবং এটি সাধারণত দেশটির বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও কফি শপে পাওয়া যায়। সম্পর্কে অনেক গল্প রয়েছে, নাতা এর ইতিহাস পর্তুগালের গুণী সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত।
পর্তুগালের এই ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন যা বিশ্বের বহু দেশে জনপ্রিয় আর প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সকালের নাস্তা বা বিকেলের নাস্তার পছন্দের শীর্ষে এই মিষ্টান্ন খাবার।

পর্তুগীজরা মনে করে এটি পর্তুগালের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অংশ এবং এই মিষ্টান্নটির ঐতিহ্য এবং ইতিহাস পর্তুগালের মানুষের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে সেই শত বছর আগে থেকেও এখনো ।

শেয়ার করুন

পর্তুগালের শত বছরের ঐতিহ্যর নাম “নাতা”

সময় ০৪:৫৪:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

প্রতিটি দেশ বা শহরের রয়েছে নিজস্ব কিছু বিশেষ স্থান, মানুষ, খাবার বা ইতিহাস ঐতিহ্যের জন্য সেই শহর বা দেশ বিশ্বের সুপরিচিত হয়। পর্তুগালও ঠিক তাই হাজার বছরের ইতিহাস বহন করা এই পুরনো দেশে রয়েছে ঐতিহ্যের ছড়াছড়ি। পর্তুগালে এমন একটি শত বছরের মিষ্টিজাতীয় খাবার হয়েছে যার ঐতিহ্যে বিশ্বের সুপরিচিত।

পাস্তেল ডি নাতার (Pastel de Nata) একটি জনপ্রিয় পর্তুগীজ ডেজার্ট। এটি মূলত একটি ক্ষুদ্র সৃতো কাস্টার্ড টার্ট যা মিষ্টি এবং ক্রিস্পি খোলের মধ্যে একটি ক্রিমি কাস্টার্ড ভরপুর থাকে। এই ডেজার্টটি পর্তুগালের একাধিক অঞ্চলে তৈরি হয়, তবে সবচেয়ে বিখ্যাত স্থান হলো পর্তুগালের লিসবনের ‘বেলেম’ অঞ্চলে।

“নাতা” (Nata) শব্দটি সাধারণত পর্তুগীজ ভাষায় ব্যবহৃত হয় এবং এর অর্থ হলো “ক্রিম” বা “কাস্টার্ড ক্রিম”। এটি পাস্তেল ডি নাতার (Pastel de Nata) ডেজার্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যেখানে কাস্টার্ড ক্রিম একটি মিষ্টি এবং সামান্য মশলাদার পদার্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বেকড পাফ প্যাস্ট্রি শেলের মধ্যে রাখা হয়।

পর্তুগালের বেলেম শহরে, জেরোনিমোস মোনাস্ট্রি (Jerónimos Monastery) থেকে। ১৮শ শতাব্দীতে, এই মঠের নানীরা অতিরিক্ত ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করতে পারতেন, যেহেতু মঠে দুধ ও ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করে কাপড় সাটানো হতো। এর ফলে, ডিমের কুসুমগুলি অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে এবং তারা সেগুলি কাস্টার্ড ক্রিম তৈরি করতে ব্যবহার শুরু করেন।

পর্তুগালের শত বছরের ঐতিহ্যর নাম "নাতা"
পর্তুগালের শত বছরের ঐতিহ্যর নাম “নাতা”

যেহেতু মঠের আর্থিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল, ১৮২০ সালের পর, মঠটি বন্ধ হয়ে যায় এবং এই কাস্টার্ড টার্টের রেসিপিটি স্থানীয় একটি বেকারি, পাস্তেলিরা ডে বেলেম (Pastéis de Belém) নামে পরিচিত বেকারি, নিজেদের ব্যবসার জন্য গ্রহণ করে এবং সেখানে এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এটি মূলত দুধ, ডিম, চিনি এবং ময়দা দিয়ে তৈরি করা হয়, যাতে ক্রিমি এবং মিষ্টি স্বাদ তৈরি হয়।

পাস্তেল ডি নাতা এই মিষ্টান্নটি পর্তুগালের ইতিহাসের একটি অংশ এবং এটি সাধারণত দেশটির বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ও কফি শপে পাওয়া যায়। সম্পর্কে অনেক গল্প রয়েছে, নাতা এর ইতিহাস পর্তুগালের গুণী সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত।
পর্তুগালের এই ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন যা বিশ্বের বহু দেশে জনপ্রিয় আর প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সকালের নাস্তা বা বিকেলের নাস্তার পছন্দের শীর্ষে এই মিষ্টান্ন খাবার।

পর্তুগীজরা মনে করে এটি পর্তুগালের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অংশ এবং এই মিষ্টান্নটির ঐতিহ্য এবং ইতিহাস পর্তুগালের মানুষের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে সেই শত বছর আগে থেকেও এখনো ।