ঢাকা ১১:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পৃথিবীর যেসব দেশে একটিও মসজিদ নেই

নিউজ ডেস্ক
  • সর্বশেষ আপডেট ১২:৫৪:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪
  • / 336

ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক বিবেচনা করলে বিশ্বে খ্রিস্টানদের পরেই রয়েছে ইসলাম ধর্মেও অনুসারীদের অবস্থান। তবে ইউরোপের গবেষকরা বলছেন, যে হারে মুসলিমদের সংখ্যা বাড়ছে তাতে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা হবে।

আর এ কারণে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই রয়েছে মুসলমানদের ধর্মীয় উপাসনালয় ‘মসজিদ’।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মসজিদ ইন্দোনেশিয়ায়, সংখ্যায় প্রায় আট লাখ। দ্বিতীয় অবস্থানে ভারত, সংখ্যায় তিন লাখ। যদিও ভারতের অনেক এলাকায় মাইকে আজান ও প্রকাশ্যে গরু জবাইয়ের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মসজিদের সংখ্যায় বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ – দুই লাখ ৫০ হাজার ৩৯৯টি। পাকিস্তানে মসজিদের সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়েও কম।

তবে পৃথিবীতে এমনও দেশ রয়েছে; যেখানে একটিও মসজিদ নেই। অথচ সেসব দেশেও উল্লেখযোগ্য মুসলমান রয়েছে। এরপরেও দেশগুলোর সরকার সেসব দেশে মসজিদ
নির্মাণে অনুমতি দেয়নি।

পথিবীতে এমন তিনটি দেশ রয়েছে। দেশগুলোর মুসলমানরা বহুবার আবেদন করেছেন, তাদের নামাজের জন্য এলাকায় একটি মসজিদ হোক। কিন্তু কার্যত কিছু হয়নি।

এই ধরনের দেশের তালিকায় একেবারে উপরের দিকেই রয়েছে স্লোভাকিয়া। চেকো চেকোস্লোভাকিয়া থেকে ভেঙে হয়েছে স্লোভাকিয়া। খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশটিতে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অন্তত ৫,০০০। দেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় তা ০.১ শতাংশ।

দেশটির জনগোষ্ঠী বহুবার মসজিদের দাবি তুলেছে। ২০১৬ সালে দেশটিতে একটি আইন পাস করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, দেশটিতে কোনো ধর্মীয় পরিচয় নির্দিষ্ট করা হবে না। যদিও দেশটিতে খ্রিস্টানদের একাধিক গির্জা রয়েছে।

এরকম আরেকটি দেশ হলো এস্তোনিয়া। ২০১১ সালের জনগণনায় জানা গিয়েছিল, এদেশে প্রায় ১৫০৮ জন মুসলিমের বাস। সংখ্যাটা সারা দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ০.১৪ শতাংশ। অথচ এদেশে আপনি একটিও মসজিদ দেখতে পাবেন না! তবে এদেশে ফ্ল্যাটে নামাজ পড়ার প্রচলন হয়েছে।

আর একটি দেশ রয়েছে মোনাকো; যেটি পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশগুলোর একটি। দেশটি ফ্রান্সের দক্ষিণ পূর্বে ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত। দেশটিতে ফরাসি ভাষা বহুল ব্যবহৃত। এখানেও বিপুলসংখ্যক মুসলিম জনগোষ্ঠীর বাস। কিন্তু এখানেও কোনো মসজিদ নেই।

মসজিদবিহীন আরেকটি দেশ ভ্যাটিকান সিটি; এটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট রাষ্ট্র বলা হয়। এটি পোপের দেশ। ১৯৮৪ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত ‘বিশ্ব ঐতিহাসিক স্থান’ এবং খ্রিস্টধর্মের অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে এটি বিবেচিত হয়। এই দেশে নেই কোনো মুসলমান, নেই কোনো মসজিদও।

মসজিদবিহীন আরেকটি দেশ উরুগুয়ে। দেশটি দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মধ্যে অবস্থিত। খ্রিষ্টান অধ্যুষিত উরুগুয়েতে ৯০০ থেকে ১০০০ ইসলাম ধর্মাবলম্বী বাস করে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ০.০২ শতাংশ। দেশটিতে নেই কোনো মসজিদ। তবে সেখানে তিনটি ইসলামিক সেন্টার আছে।

তালিকায় এশিয়ার দেশ ভুটানও রয়েছে। যাকে এশিয়ার সবচেয়ে সুখী দেশও বলা হয়। দেশটির রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে রয়েছে বজ্রযান বৌদ্ধধর্ম। যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৪ দশমিক ৮ শতাংশ। দেশটিতে প্রায় আট হাজার মুসলিমও রয়েছে। কিন্তু সেখানে মসজিদ স্থাপন ও প্রকাশ্যে নামাজের অনুমতি নেই।

তবে ভ্যাটিকান সিটি ছাড়া অন্যান্য দেশগুলোতে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ছে। সেখানে মসজিদের পক্ষে আওয়াজও বেশ জোরালো হচ্ছে।

Tag :

এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

পৃথিবীর যেসব দেশে একটিও মসজিদ নেই

সর্বশেষ আপডেট ১২:৫৪:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০২৪

ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক বিবেচনা করলে বিশ্বে খ্রিস্টানদের পরেই রয়েছে ইসলাম ধর্মেও অনুসারীদের অবস্থান। তবে ইউরোপের গবেষকরা বলছেন, যে হারে মুসলিমদের সংখ্যা বাড়ছে তাতে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা হবে।

আর এ কারণে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই রয়েছে মুসলমানদের ধর্মীয় উপাসনালয় ‘মসজিদ’।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মসজিদ ইন্দোনেশিয়ায়, সংখ্যায় প্রায় আট লাখ। দ্বিতীয় অবস্থানে ভারত, সংখ্যায় তিন লাখ। যদিও ভারতের অনেক এলাকায় মাইকে আজান ও প্রকাশ্যে গরু জবাইয়ের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মসজিদের সংখ্যায় বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ – দুই লাখ ৫০ হাজার ৩৯৯টি। পাকিস্তানে মসজিদের সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়েও কম।

তবে পৃথিবীতে এমনও দেশ রয়েছে; যেখানে একটিও মসজিদ নেই। অথচ সেসব দেশেও উল্লেখযোগ্য মুসলমান রয়েছে। এরপরেও দেশগুলোর সরকার সেসব দেশে মসজিদ
নির্মাণে অনুমতি দেয়নি।

পথিবীতে এমন তিনটি দেশ রয়েছে। দেশগুলোর মুসলমানরা বহুবার আবেদন করেছেন, তাদের নামাজের জন্য এলাকায় একটি মসজিদ হোক। কিন্তু কার্যত কিছু হয়নি।

এই ধরনের দেশের তালিকায় একেবারে উপরের দিকেই রয়েছে স্লোভাকিয়া। চেকো চেকোস্লোভাকিয়া থেকে ভেঙে হয়েছে স্লোভাকিয়া। খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশটিতে মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা অন্তত ৫,০০০। দেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় তা ০.১ শতাংশ।

দেশটির জনগোষ্ঠী বহুবার মসজিদের দাবি তুলেছে। ২০১৬ সালে দেশটিতে একটি আইন পাস করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে, দেশটিতে কোনো ধর্মীয় পরিচয় নির্দিষ্ট করা হবে না। যদিও দেশটিতে খ্রিস্টানদের একাধিক গির্জা রয়েছে।

এরকম আরেকটি দেশ হলো এস্তোনিয়া। ২০১১ সালের জনগণনায় জানা গিয়েছিল, এদেশে প্রায় ১৫০৮ জন মুসলিমের বাস। সংখ্যাটা সারা দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ০.১৪ শতাংশ। অথচ এদেশে আপনি একটিও মসজিদ দেখতে পাবেন না! তবে এদেশে ফ্ল্যাটে নামাজ পড়ার প্রচলন হয়েছে।

আর একটি দেশ রয়েছে মোনাকো; যেটি পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশগুলোর একটি। দেশটি ফ্রান্সের দক্ষিণ পূর্বে ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত। দেশটিতে ফরাসি ভাষা বহুল ব্যবহৃত। এখানেও বিপুলসংখ্যক মুসলিম জনগোষ্ঠীর বাস। কিন্তু এখানেও কোনো মসজিদ নেই।

মসজিদবিহীন আরেকটি দেশ ভ্যাটিকান সিটি; এটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট রাষ্ট্র বলা হয়। এটি পোপের দেশ। ১৯৮৪ সালে জাতিসংঘ ঘোষিত ‘বিশ্ব ঐতিহাসিক স্থান’ এবং খ্রিস্টধর্মের অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে এটি বিবেচিত হয়। এই দেশে নেই কোনো মুসলমান, নেই কোনো মসজিদও।

মসজিদবিহীন আরেকটি দেশ উরুগুয়ে। দেশটি দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মধ্যে অবস্থিত। খ্রিষ্টান অধ্যুষিত উরুগুয়েতে ৯০০ থেকে ১০০০ ইসলাম ধর্মাবলম্বী বাস করে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ০.০২ শতাংশ। দেশটিতে নেই কোনো মসজিদ। তবে সেখানে তিনটি ইসলামিক সেন্টার আছে।

তালিকায় এশিয়ার দেশ ভুটানও রয়েছে। যাকে এশিয়ার সবচেয়ে সুখী দেশও বলা হয়। দেশটির রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে রয়েছে বজ্রযান বৌদ্ধধর্ম। যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৪ দশমিক ৮ শতাংশ। দেশটিতে প্রায় আট হাজার মুসলিমও রয়েছে। কিন্তু সেখানে মসজিদ স্থাপন ও প্রকাশ্যে নামাজের অনুমতি নেই।

তবে ভ্যাটিকান সিটি ছাড়া অন্যান্য দেশগুলোতে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ছে। সেখানে মসজিদের পক্ষে আওয়াজও বেশ জোরালো হচ্ছে।