ঢাকা ১২:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এভারেস্টের চূড়া ছোয়া যার নেশা ও পেশা

আকাশ ইসলাম
  • সর্বশেষ আপডেট ০৬:৪০:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪
  • / 256

হিমালয়ের দুর্গম চূড়াগুলো জয় করতে চান হাজারো পর্বতারোহী। যাদের কাঁধে ভর করে এসব অভিযাত্রা সফল হয়, তাদের বলা হয় শেরপা। এদেরই একজন কামি রিতা। যিনি এরইমধ্যে কিংবদন্তী হয়ে উঠেছেন।

২০২৪ সালে ২৮ বার এভারেস্ট জয় করে তিনি গড়েছেন এক অবিস্মরণীয় রেকর্ড। আর এর মাধ্যমে তিনি নিজেই নিজের রেকর্ড ভেঙেছেন।

১৯৭০ সালের ১৭ জানুয়ারি, নেপালের থামে গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কামি রিতা। ছোটবেলা থেকেই পাহাড়ের কঠিন জীবন, প্রাকৃতিক চ্যালেঞ্জের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন তিনি। শেরপা সম্প্রদায় মূলত পর্বতারোহণের জন্যই বিক্ষাতু এবং শৈশব থেকেই এই দক্ষতা অর্জন করেছেন কামি রিতা।

কামি রিতার পর্বতারোহণের শুরু হয় মাত্র ২৪ বছর বয়সে, যখন তিনি প্রথমবারের মতো মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে অংশ নেন। সেই সময় থেকেই এভারেস্ট ছিল তার কাছে শুধুমাত্র একটি চূড়া নয় বরং জীবনযুদ্ধের অংশ।

বছরের পর বছর ধরে নানা প্রতিকুলতার সম্মুখীন হয়েও তিনি ২৮ বার এই চূড়ায় পৌঁছেছেন। প্রতিবার এভারেস্ট জয় করা ছিল একটি নতুন অভিজ্ঞতা, প্রতিবারই ছিল নতুন চ্যালেঞ্জ।

এভারেস্ট অভিযানের চ্যালেঞ্জ সহজ নয়। বাতাসে অক্সিজেনের অভাব, প্রবল ঠান্ডা, এবং হিমবাহের বিপদ সবসময় মাথার ওপর ঝুলতে থাকে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা

করেই শেরপারা অভিযাত্রীদের সহায়তা করেন। কামি রিতা শেরপা এই বিপদসংকুল পরিবেশে নিজের দক্ষতা এবং ধৈর্যের অনন্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

কামি রিতা তার জীবনে অর্জিত অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, “প্রতিটি বার এভারেস্ট জয় করা যেমন ছিল আনন্দের, তেমনই ছিল আমার শারীরিক এবং মানসিক সামর্থ্যের পরীক্ষা। আমি শেরপা সুম্প্রদায়ের সন্তান, আমাদের জীবনই হলো এই পাহাড়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা। তবে, এটা শুধু একটা কাজ নয়, এটা আমাদের  জন্য এক ধরনের দায়িত্বও।

শুধু এভারেস্টই নয়, কামি রিতা জয় করেছেন হিমালয়ের আরও অনেক শীর্ষচূড়া। তার সফলতার পেছনে রয়েছে শেরপা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য , যারা যুগের পর যুগ ধরে পর্বতারোহীদের পাশে থেকে তাদের সাফল্যের পথে চালিত করেছে। শেরপাদের সাহায্য ছাড়া পর্বতারোহণের স্বপ্ন পূরণ করা অনেকের পক্ষেই অসম্ভব হতো।

তার অসাধারণ সাফল্যের জন্য কামি রিতা বিশ্বব্যাপী  প্রশংসিত হয়েছেন। নেপালের শেরপা সম্প্রদায়ের গর্ব তিনি। কামি রিতা নেপালে একজন জাতীয় বীর হিসেবে বিবেচিত।

কামি রিতা শুধু পর্বতারোহণের নায়ক নন, তিনি শেরপা সম্প্রদায়ের উন্নয়ন এবং পর্বতারোহীদের সুরক্ষার জন্য  কাজ করছেন। তিনি চান, নেপালে পর্বতারোহণ শিল্প আরও বিকশিত হোক, এবং শেরপাদের কাজের ন্যায্য মূল্যায়ন হোক। ভবিষ্যতে তিনি পর্বতারোহণের জন্য আরও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং সু্রক্ষার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা
রাখতে চান।

Tag :

এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

এভারেস্টের চূড়া ছোয়া যার নেশা ও পেশা

সর্বশেষ আপডেট ০৬:৪০:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

হিমালয়ের দুর্গম চূড়াগুলো জয় করতে চান হাজারো পর্বতারোহী। যাদের কাঁধে ভর করে এসব অভিযাত্রা সফল হয়, তাদের বলা হয় শেরপা। এদেরই একজন কামি রিতা। যিনি এরইমধ্যে কিংবদন্তী হয়ে উঠেছেন।

২০২৪ সালে ২৮ বার এভারেস্ট জয় করে তিনি গড়েছেন এক অবিস্মরণীয় রেকর্ড। আর এর মাধ্যমে তিনি নিজেই নিজের রেকর্ড ভেঙেছেন।

১৯৭০ সালের ১৭ জানুয়ারি, নেপালের থামে গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কামি রিতা। ছোটবেলা থেকেই পাহাড়ের কঠিন জীবন, প্রাকৃতিক চ্যালেঞ্জের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন তিনি। শেরপা সম্প্রদায় মূলত পর্বতারোহণের জন্যই বিক্ষাতু এবং শৈশব থেকেই এই দক্ষতা অর্জন করেছেন কামি রিতা।

কামি রিতার পর্বতারোহণের শুরু হয় মাত্র ২৪ বছর বয়সে, যখন তিনি প্রথমবারের মতো মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে অংশ নেন। সেই সময় থেকেই এভারেস্ট ছিল তার কাছে শুধুমাত্র একটি চূড়া নয় বরং জীবনযুদ্ধের অংশ।

বছরের পর বছর ধরে নানা প্রতিকুলতার সম্মুখীন হয়েও তিনি ২৮ বার এই চূড়ায় পৌঁছেছেন। প্রতিবার এভারেস্ট জয় করা ছিল একটি নতুন অভিজ্ঞতা, প্রতিবারই ছিল নতুন চ্যালেঞ্জ।

এভারেস্ট অভিযানের চ্যালেঞ্জ সহজ নয়। বাতাসে অক্সিজেনের অভাব, প্রবল ঠান্ডা, এবং হিমবাহের বিপদ সবসময় মাথার ওপর ঝুলতে থাকে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা

করেই শেরপারা অভিযাত্রীদের সহায়তা করেন। কামি রিতা শেরপা এই বিপদসংকুল পরিবেশে নিজের দক্ষতা এবং ধৈর্যের অনন্য উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন।

কামি রিতা তার জীবনে অর্জিত অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, “প্রতিটি বার এভারেস্ট জয় করা যেমন ছিল আনন্দের, তেমনই ছিল আমার শারীরিক এবং মানসিক সামর্থ্যের পরীক্ষা। আমি শেরপা সুম্প্রদায়ের সন্তান, আমাদের জীবনই হলো এই পাহাড়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা। তবে, এটা শুধু একটা কাজ নয়, এটা আমাদের  জন্য এক ধরনের দায়িত্বও।

শুধু এভারেস্টই নয়, কামি রিতা জয় করেছেন হিমালয়ের আরও অনেক শীর্ষচূড়া। তার সফলতার পেছনে রয়েছে শেরপা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য , যারা যুগের পর যুগ ধরে পর্বতারোহীদের পাশে থেকে তাদের সাফল্যের পথে চালিত করেছে। শেরপাদের সাহায্য ছাড়া পর্বতারোহণের স্বপ্ন পূরণ করা অনেকের পক্ষেই অসম্ভব হতো।

তার অসাধারণ সাফল্যের জন্য কামি রিতা বিশ্বব্যাপী  প্রশংসিত হয়েছেন। নেপালের শেরপা সম্প্রদায়ের গর্ব তিনি। কামি রিতা নেপালে একজন জাতীয় বীর হিসেবে বিবেচিত।

কামি রিতা শুধু পর্বতারোহণের নায়ক নন, তিনি শেরপা সম্প্রদায়ের উন্নয়ন এবং পর্বতারোহীদের সুরক্ষার জন্য  কাজ করছেন। তিনি চান, নেপালে পর্বতারোহণ শিল্প আরও বিকশিত হোক, এবং শেরপাদের কাজের ন্যায্য মূল্যায়ন হোক। ভবিষ্যতে তিনি পর্বতারোহণের জন্য আরও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং সু্রক্ষার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা
রাখতে চান।